নুরুল আবছার চৌধুরী নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তর চট্টগ্রাম >>> বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, “নোংরা রাজনীতি আওয়ামীলীগ করেছিলো, সেটা আমরা করি না। যারা আমাদেরকে কষ্ট দিয়েছে, আমাদের সন্তানদের কষ্ট দিয়েছে, এই কষ্ট আমরা কাউকে দেবো না। তবে তাদের নজরে রাখবো। মনে রাখবেন, সবার উপরে বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু আওয়ামী লীগকে নয়।”গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কাদেরনগর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাসবভবন প্রাঙ্গনে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। উপজেলা এবং পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ মহসিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপি নেতা শওকত আলী নূর, মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মো. ইউসুফ চৌধুরী, মো. নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, মো. খোরশেদ আলম, মো. মসিউদ্দৌলা, মো. হেলাল উদ্দিন শাহ, এখতিয়ার হোসেন, মো. শহিদুল্লাহ, ভিপি মো. আনছুর উদ্দিন, মাসুদ চৌধুরী, কাজী নাজিম উদ্দীন, আবু বক্কর, হেলাল আহমদ, সৈয়দ নূর, দিলদার হোসেন চেয়ারম্যান, এম কামাল উদ্দিন মাষ্টার, শাহেদ কামাল, আনোয়ারুল হক বাবুল মাষ্টার, মুজিবুল হক, জাকির, আনিছ, মাওলানা এনামুল হক, ওসমান প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন মাকসুদুর রহমান চৌধুরী ও মো. ফারুকুল ইসলাম।হুম্মাম কাদের চৌধুরী আরো বলেন, “যারা আওয়ামীলীগকে সমর্থন দিয়েছে, ভোট দিয়েছে, তারাও আমাদের পরিবারের মানুষ। আমার পরিবারেও অনেক আওয়ামীলীগ আছে। আপনাদেরও হয়ত কোন মামাতো ভাই, চাচাতো ভাই কেউ না কেউ তো আওয়ামীলীগ করে। এখন আমরা যদি বার বার করে বলি, আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের সম্পর্ক থাকবে না, সেটা তো আর হবে না। আপনাদের ধরে নিতে হবে, যারা আওয়ামীলীগ করে, তারা সারাজীবন তাই করবে। আমি আপনাদের বলছি না, তাদের বুকে টেনে নিন। আওয়ামী লীগকে যেভাবে আমি বলে দিতে পারি যে, আমরা আপনাদের বিশ্বাস করি না। তার থেকে বড় হচ্ছে যে, যারা আমাদের সাথে মোনাফেকি করছে। তারা আমাদের পাশে দাড়িয়ে, আমাদের পিঠে ছুরি দিয়েছে। বিপদের সময় খুব কম মানুষ পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল আমার। যারা পাশে দাঁড়িয়েছিল অবশ্যই তাদের মূল্যায়ন করা হবে। আর যারা আমাদেরকে ধোঁকা দিয়েছিলো, তাদেরও তালিকা বানিয়েছি আমি। আশাকরি আল্লাহর বিচারের আগে এই দুনিয়াতে তাদেরও বিচার কিছুটা আমরা করতে পারবো।গতবার আমরা যখন রাঙ্গুনিয়ায় ইফতারের জন্য আহবান করেছিলাম, তখন যে প্যান্ডেল টানানো হয়েছিলো, সেই প্যান্ডেলে আওয়ামীলীগ এসে আগুন দিয়েছিলো। নেতাকর্মীরা তখন আমাকে এসে বলেছিলো, আপনার জন্য ঠিক হবে না, আপনি এলাকায় যেতে পারবেন না। হামলা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তখন আমি তাদের কথা মেনে নিলাম, আমি এলাকায় যাবো না। আমার মাকে যখন এই কথা বলা হলো, মা তখন বলেছিলো, কাদের নগর আমার বাড়ি, আমার বাড়ির থেকে আমাকে কে বাইরে রাখতে পারে আমি দেখতে চায়। আমার মা এখানে চলে আসলো, এসে দেখলো গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। খেজুর দিয়ে ইফতার করলো। তখন এলাকাবাসী যারা ছিলো, তাদেরকে আশ্বস্ত করলো, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার রাঙ্গুনিয়া ছেড়ে কোথাও যাবে না।বার বার করে বলা হচ্ছে, রাঙ্গুনিয়ার নেতৃত্ব দিতে হবে রাঙ্গুনিয়ার মানুষদেরকে দিয়ে। বাবা ওয়াদা করে গিয়েছিলো, মরে গেলে দাফন যেনো রাঙ্গুনিয়াতে করা হয়। এই বাড়িতে দাঁড়িয়ে আমিও বার বার করে বলে দিতে চায়, ত্যাগ করলাম, ওয়াদা করে যাচ্ছি আপনাদের কাছে, মরে গেলে বাবার পাশে শুইবো না, রাঙ্গুনিয়ার মাটিতেই শুইবো। আমার বিপদের সময় আমি রাউজানের মানুষকে পাশে পাইনি, ফটিকছড়ির মানুষকে পাশে পায়নি, পাশে পেয়েছি রাঙ্গুনিয়া মানুষকে এবং তাদের উপরই ভরসা করেছিলাম। রাঙ্গুনিয়ার মানুষ আমার পাশে দাড়িয়েছিলো। বাবার কবরের পাশে যখন আমরা তাকে দাফন করছি, এখনো যখন ছবি দেখছি, তখন দেখছি বেশিরভাগ মানুষ রাঙ্গুনিয়ার। আমার খারাপ সময়ে আপনারা যেমন আমার পাশে দাড়িয়েছেন, যতদিন বেচে আছি, রাজনীতি করি আর না করি, রাঙ্গুনিয়ার গোলাম হিসেবে আমি থেকে যাবো। আপনারা যদি আমার দলকে আমার বাবাকে ভালবেসে থাকেন, তবে আমার দরজা আপনাদের জন্য সবসময়ে খোলা রয়েছে। আমি বুক দিয়েছি রাঙ্গুনিয়ার মানুষের জন্য, পিঠ কখনো দেখাবো না। যতদিন বেচে আছি, রাঙ্গুনিয়ার মানুষের জন্য কাজ করে যাবো।
Leave a Reply