আজ ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লংগদুতে জামায়াতের প্রতিবাদ সভা

লংগদুতে জামায়াতের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়


২৮ অক্টোবরে আওয়ামী লীগের লগি বৈঠার তান্ডবের লংগদুতে জামায়াতের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত

সোমবার ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪ঃ৩০ টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লংগদু উপজেলার আয়োজনে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে আওয়ামী লীগের লগি বৈঠার তান্ডবের প্রতিবাদে আলোচনা সভা, দোয়া ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতের উপজেলা আমীর মাওলানা মোঃ নাছির উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং ওছমান গনির সঞ্চালনায় লংগদু উপজেলাস্থ বাইট্টাপাড়া বাজারে অনুষ্ঠিত হয়।প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সেক্রেটারি উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লংগদু উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা এ,এল,এম সিরাজুল ইসলাম, লংগদু সদর ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মঞ্জুরুল হক, মাইনীমুখ ইউনিয়ন পশ্চিম শাখার আমীর আব্দুল জব্বার, আটারকছড়া ইউনিয়নের সভাপতি মাওলানা ফয়েজ আহমেদ, বগাচত্বর ইউনিয়নের সভাপতি ডা.ছিদ্দিকুর রহমান খোকন প্রমুখ।

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে কলঙ্কিত দিন ২৮ শে অক্টোবর ২০০৬

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আজ সেই ২৮ শে অক্টোবর। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে কলঙ্কিত দিন। দিনটি ছিল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর। ঢাকার বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে চলছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। হঠাৎ এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থান করা আওয়ামী নরপশুরা লগি বৈঠা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে। নির্মমভাবে হত্যা করে শিপন-মুজাহিদসহ ছয় জন মেধাবী ছাত্রদের। মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে অসংখ্য ছাত্র। হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, মৃত লাশের বুকের উপর এক অসভ্য ভঙ্গিমায় হিংস্র জানোয়ারের মত নেচে উল্লাস করেছে। যার ছবি ও ভিডিও গুলো সমস্ত বিশ্ববিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছে। তারা যা করেছে তা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এর পরেই এদেশে একটি বাক্য মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে,”আপনি মানুষ না আওয়ামীলীগ?”

তারা আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর বয়সে আমরা বার বার সরকার পরিবর্তন দেখেছি। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ চোরের দিক দিয়ে, লুটপাটের দিক দিয়ে, বার বার প্রথম হয়েছে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে আমাদের, আর এক্ষেত্রে আপনাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দক্ষ ও যোগ্য কর্মী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা। জামায়তে ইসলামীর নীতি ও আদর্শের আলোকে নিজেকে গড়ে তুলে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করার আহবান জানান তিনি।

এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছে।

তবে সেদিন বাংলাদেশের ডান বাম সকল বড় বড় সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদ আইনজীবীরা ঐ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিলেন এবং বিচারও দাবি করেন। শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো পৃথিবীতে সেদিনের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নিন্দা জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কর্মসূচি সফল করায় কর্মীবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।

সেদিনের টিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায় সেদিনের সেই গুলিবর্ষণ ও লগি-বৈঠার তাণ্ডবের নেতৃত্বে ছিলেন ডা: ইকবাল ও হাজী সেলিম। আসলে আওয়ামীদের চরিত্রই এমন। তারা ক্ষমতায় থাকলেও হত্যা সন্ত্রাস করে আর না থাকলেও সন্ত্রাসই তাদের চরিত্র। ২০০১ সালে ডা: ইকবালের উপস্থিতি ও নির্দেশে চারজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার সেই ঘটনা আজও দেশবাসীর মনে আছে। এ ছাড়া তাদের ১৯৭১-৭৪ আমলে ৩৭ হাজার নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে, লুট করা হয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ, জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে হাজার হাজার বাড়ি ঘর। সেই বাকশালী চরিত্র যখন মানুষ ভুলতে বসেছে তখনই ১৯৯৬-২০০১ আমলে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে হত্যাসহ ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে চরম কষ্ট দিয়েছিল। ২৮ অক্টোবর দেশব্যাপী যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় তা আওয়ামী লীগের চরিত্রেরই ধারাবাহিকতা মাত্র।

আমরা আজ এই সমাবেশ থেকে বলতে চাই এখন সময় এসেছে ঐ খুনি হাসিনার সন্ত্রাসীদের পৈশাচিক নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকলকে খুজে বের করে গ্রেফতার করতে হবে এবং তাদের যথাযথ বিচার করতে হবে।
সমাবেশ শেষে ২৮ অক্টোবর, ২০০৬ এর লগি বৈঠার তাণ্ডবের আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এবং হত্যাকান্ডে নিহত সকলের জন্য দোয়া করা হয়।

আব্দুল জব্বার, লংগদু (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি,


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর