মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো >>> বৈষম্যনীতির কারনে খুলনাকে মৃত নগরীতে পরিনত করা হয়েছে। আমাদের এই জনপদের সাধীনতার জন্য আলেম সমাজ লড়াই করছে, এই জনপদের সাধীনতার জন্য বিপ্লবীরা বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।ছাত্র, শ্রমিক,জনতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।এই জনপদের ছাত্র,শ্রমিক জনতা এরশাদের সৈরশাসন ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের জন্য রাজপথে রক্ত দিয়ে এদেশের মানুষকে ঋনগ্রস্ত করেছে। খুলনার ঐতিহ্য ছিল খালিশপুর। খুলনায় এক সময়ে পাটকলের সাইরেনে মানুষের ঘুম ভাঙতো।এই অঞ্চলের সংস্কৃতির সাথে, অর্থনীতির সাথে, জীবনধারার সাথে যে সংস্কৃতি টিকে রয়েছে আজকে বৈষম্যনীতির কারনে খুলনাকে প্রায় মৃত নগরী পরিনত করা হয়েছে। খুলনাকে বলা হয় শেখ পরিবারের দ্ধিতীয় ঘাটি।তারা এই মৃত নগরীকে জীবন্ত করতে পারেনি।তারা বিত্ত, অর্থ,আর ব্যক্তিগত প্রাচুর্যের সময় ও আনন্দ উল্লাসে মত্ত ছিলেন। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের তরুণ নেতৃত্বের যে,কজন আছেন তাদের মধ্যে রকিবুল ইসলাম বকুল একজন ইউনিভার্সিটি পড়া শিক্ষিত রাজনীতিবীদ।তিনি যতটা না নিজে চেয়েছেন তার চেয়ে দল তাকে এই খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহানআলী এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য তাকে নির্ধারন করেছেন। জাতীয় নির্বাচনকে যে ১১ টি অঞ্চল নির্ধারন করে দেয়, জয় ও পরাজয় নিশ্চিত করে তার মধ্যে এই খালিশপুরের শিল্পাঞ্চল অন্যতম।আমরা বিশ্বাস করি আজকের এই জনসভা শ্রমিকের জনসভা। আমরা এই বন্ধ পাটকল চালুর জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে একটি পৃথক কমিটি গঠন করেছি। বাংলাদেশের ভাগ্যাহত শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যা প্রায় ৭ কোটি ৩৫ লাখ। এর মধ্যে ২ কোটি শ্রমজীবী মানুষ যারা বিদেশে কাজ করে এদেশে রেমিট্যান্স পাঠায়, আর ওষুধ কারখানা, গার্মেন্টস ও বিভিন্ন কুঠির শিল্পের পন্য বিদেশে রপ্তানী করে বাংলাদেশের ৭০ ভাগ জনগোষ্ঠী অর্থ উপার্জন করে এদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে।সেই শ্রমজীবী মানুষ আজ তাদের সংখ্যা ৭ কোটি ৩৫ লাখে পরিনত হয়েছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠী যেদিক হেলবে সেদিকে ক্ষমতা নির্ধারন হবে।আর বাংলাদেশের ক্ষমতা কাঠামো পরিবর্তন এবং ক্ষমতা গঠনের জন্য দুই শক্তি একই বৃন্তে লড়াই করে যাচ্ছে, এরা হলো ছাত্র, শ্রমিক। এবারও হাসিনার ক্ষমতার তক্তকে খান খান করে দিয়েছে এই দুই প্রধান শক্তি। রাজপথে রক্ত দিয়ে বাংলাদেশকে সৈরাচার মুক্ত করেছে এই ছাত্র,শ্রমিক, জনতা। এই অন্যতম লড়াইয়ে কারিগর আমাদের শ্রমিক শ্রেণী।আজকের এই সমাবেশ ভাগ্যাহত, নির্যাতিত শোষিত বঞ্চিত বিশেষ করে খুলনাঞ্চলের শ্রমিকদের। খুলনাঞ্চলের মানুষ,অভিভাবক, ব্যবসায়ী সবাই দাবি করেন বন্ধ শিল্প কারখানা চালু করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বন্ধ ২৫ টি পাটকল চালু করতে হবে, ৫ টি পাটকল সহ সকল শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে এবং লিজ প্রথা বাতিল করে রাস্টিয় ব্যাবস্থাপনায় পাটকল, নিউজপ্রিন্ট,হার্ডবোর্ড মিল অবিলম্বে চালু করতে হবে। অন্যথায় এই শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায় করা হবে। মিলের অভ্যন্তরে টেন্ডারের নামে মুল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি ও লুটপাট বন্ধ করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটি প্রধান সমন্বয়ক এ্যাড: সামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রধান অতিথি হিসেবে আজ ৬ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ টায় খালিশপুর পিপলস গোল চত্বরে বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবার সময় এসব কথা বলেন। উক্ত বিশাল শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল খালিশপুর শিল্পাঞ্চল কমিটি আহবায়ক আবু দাউদ দীন মোহাম্মদ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল। এসময় তিনি বলেন, কার্যত খালিশপুরে আমরা আসলে কেউ ভালো নেই। ভালো আমরা তখনই থাকবো যখন এই শ্রমিক ভাইদের মুখে হাসি দেখবো।এই ভুতুড়ে নগরী যখন কর্মচঞ্চলে ফিরে আসবে,আমাদের সন্তানেরা স্কুলে যাবে, সাস্থ্য সেবা,আবাসন ফিরে পাবে।আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা তারা তাদের ন্যায্য দাবি যখন ফিরে পাবে তখন আমাদের মুখে হাসি ফুটে উঠবে। তিনি আরো বলেন, ছাত্র, শ্রমিক, জনতা মিলে একটি অধ্যায় আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।আরেকটি অধ্যায় বাকি আছে সেটি হলো জনগনের সরকার।জনগনের সরকার যদি আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি তাহলে সে সরকার শ্রমিকের ভাগ্য ফেরাতে সচেষ্ট থাকবে ও বাধ্য থাকবে।সেই সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের রাজপথের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আর ততক্ষন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে যতক্ষন পর্যন্ত একটি সাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয়।আর এই নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন।তিনি আরো বলেন, দেশের অবস্থা ভালো না।আইন শৃংখলা পরিস্থিতি চরম অবনতি।অবিলম্বে জনগনের ভোটের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগনের প্রতিনিধির হাতে হস্তান্তরের দাবি জানান। পাশাপাশি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ, ২৫ টি পাটকল ও নিউজপ্রিন্ট, হার্ডবোর্ড মিল চালুর দাবি জানান। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটি আনোয়ার হোসাইন, খুলনা মহানগর বিএনপি আহবায়ক এ্যাড: শফিকুল আলম মনা, সদস্য বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও সিনিয়র সহ সভাপতি জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটি মো: মতিয়ার রহমান ফরাজি, পাট শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা, জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটি প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, খালিশপুর থানা বিএনপি সভাপতি এ্যাড: শেখ মোহাম্মাদ আলী বাবু,সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস সহ খুলনা মহানগর, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহানআলী থানা বিএনপি বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের পাট শ্রমিকদলের নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply