শ.ম.গফুর >>> মিয়ানমার সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার স্থল এবং জলসীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে দেদারছে এপারে আসছে ইয়াবার চালান।জড়িত রয়েছে নতুন-পুরানো ইয়াবা কারবারি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ওপার থেকে পাচার হয়ে আসা ইয়াবার চালান বেশীর ভাগ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডুকছে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে।সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হচ্ছে।এমন কোন দিন নেই মাদকের চালান জব্দ হচ্ছেনা।আর ইয়াবা,মাদক,চোরাচালান, অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্তে বিজিবি, কোষ্টগার্ড সহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা রয়েছে কঠোর অবস্থানে।গত দুইদিনে বিজিবি ও ডিএনসি’র পৃথক অভিযানে জব্দ করা হয়েছে প্রায় পৌণে ৩ লক্ষাধিক(২৮২৩০০) পিস ইয়াবা। এতে ইয়াবা বহনে জড়িত ৩ পাচারকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।বিজিবি সুত্রে জানা গেছে,১৮ মার্চ( মঙ্গলবার) সকালে টেকনাফের নাফনদ সীমান্তে অভিযান চালিয়ে দুই লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের আলিখালী এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।তবে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, সকালে নাফ নদীর হ্নীলা ইউনিয়নের আলিখালী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান পাচারের খবরে বিজিবি’র একটি দল অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে নাফ নদীর জলসীমার শূন্যরেখা অতিক্রম করে সাঁতরিয়ে সন্দেহজনক দুই ব্যক্তি তীরের দিকে আসতে দেখে বিজিবি’র সদস্যরা থামার জন্য নির্দেশ দেন। এতে বিজিবি’র সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যক্তিদ্ধয় সাথে থাকা দুইটি বস্তা পানিতে ফেলে মিয়ানমার জলসীমার অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়।পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে পাচারকারীদের ফেলে যাওয়া বিশেষভাবে মোড়কজাত প্লাস্টিকের দুটি বস্তা উদ্ধার করা হয়। বস্তা দুটি খুলে পাওয়া যায় ২ লাখ পিস ইয়াবা। উদ্ধার করা ইয়াবাগুলো বিজিবি’র ব্যাটালিয়ন দপ্তরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির এ কর্মকর্তা।তিনি আরোও বলেন,মাদক কারবারিদের সংঘবদ্ধ একটি সক্রিয় চক্র কৌশলে সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা নিয়ে এসে সংরক্ষণ করে লাখো রোহিঙ্গার বসতি থাকা ক্যাম্পে, পরে সুযোগ বুঝে অন্যত্র তা পাচার করা হয়।এদিকে গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে, টমটমে করে চালের বস্তায় কৌশলে ইয়াবা লুকিয়ে মজুদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা গোপন মজুদঘরে (গুদাম)।খবর পেয়ে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রবেশমুখে অবস্থান নেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি আভিযানিক দল।এ সময় সন্দেহজনক একটি টমটম থামিয়ে তল্লাশীর পর পাওয়া যায় ৪০ হাজার পিস ইয়াবা।এ সময় আটক করা হয় উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালুখালী এলাকার মৃত বদিউর রহমানের পুত্র রুহুল আমিন নামে একজন’কে।অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কক্সবাজার ডিএনসি’র উপ-পরিদর্শক সানোয়ার হোসেন জানান, মাদক প্রতিরোধে ডিএনসি’র নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। আটককৃতকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।একইদিন রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়েছে বিজিবি।কক্সবাজার-৩৪ বিজিবি’র ঘুমধুম বিওপি’র জোয়ানেরা অভিযান পরিচালনা করে ২৩ শত পিস ইয়াবা উদ্ধার করেন।এ সমাই উদ্ধার করা ইয়াবা বহনের দায়ে নোয়াপাড়া এলাকার মৃত সোনাআলীর ছেলে নুরুল আবসার এবং একই এলাকার গিয়াস উদ্দিন মামুনের ছেলে মোহাম্মদ কায়েস’কে আটক করা হয়।১৮ মার্চ ঘুমধুম বিওপি’র বিজিবি’র জোয়ানেরা আরো ৪০ হাজার পিস পরিত্যক্ত ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা গুলো ফেলে পালিয়ে যান পাচারকারীরা। এমনই তথ্য নিশ্চিত করে কক্সবাজার-৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে:কর্ণেল ফারুক হোসেন খান বলেন,ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে পুর্ব থেকে সংবাদ ছিল বিজিবি’র কাছে।অভিযানে নেমে দুইদিনে ৪২৩০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার ও দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়।আটককৃতদের নিকটস্থ থানায় সোপর্দ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সীমান্তে মাদক, চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ রোধে অভিযান চলমান রয়েছে।
Leave a Reply