মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা:
পাটকল রক্ষা আঞ্চলিক কমিটির পুর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্লাটিনাম ও ক্রিসেন্ট মিল গেটে অবস্থান কর্মসুচি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৪ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৪ টায় মিল গেটে অবস্থান কর্মসুচি ও আলোচনা সভা আহবায়ক শহিদুল ইসলাম গিয়াসের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের সাবেক সিবিএ সভাপতি মো: নুরুল হক। এ সময় তিনি বলেন, বিগত পতিত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো এ মিল গুলো আর চালু করা যাবে না। মিলের অভ্যন্তরে মেশিন ঠিক নাই।মিল তার জায়গায় আছে, যন্ত্রপাতি ও মিলের অভ্যন্তরে রয়েছে আপনারে এসে দেখে যান।মিল চালু করতে কোন সমস্যা নাই।অল্প কিছু টাকা হলে মিল গুলো রাস্ট্রিয় ব্যাবস্থাপনায় চালু করা সম্ভব। শুধু তখন ১০০০ হাজার কোটি টাকা দিলে এ মিল গুলো বিএমআর করলে চালু হতো।তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, খুব শীঘ্রই এ ধরনের প্রস্তাব আপনাদের কাছে আসবে। বন্ধ ৬ টি চিনিকল চালু করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চিনিকল চালু করেন আপত্তি নাই। পাটকল গুলো চালু করুন। সরকার পলিথিন নিষিদ্ধ করায় পাটের বস্তা ও ব্যাগের চাহিদা দেশের বাজার সহ বাহিরে বৃদ্ধি পাবে।এ অবস্থায় পাটকল গুলো চালু করলে সরকার লাভবান হবে শ্রমিক কর্মসংস্থান ফিরে পাবে।আপনারা হতাশ হবেন না। রাস্ট্রিয় ভাবে প্লাটিনাম ও ক্রিসেন্ট জুট মিল সহ সকল মিল আবার চলবে।মিলের সেই সাইরেন আবার বেজে উঠবে। শ্রমিকদের পদচারনায় এ মিল এলাকা আবার মুখরিত হয়ে উঠবে।পাটকল গুলো বিএমআর করে পাট আসলেই মিল চালু করা সম্ভব। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বর্তমান অন্তবর্তি সরকারকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা সহ বিজেএমসিকে বলতে চাই রাস্টিয় পাটকল রাস্ট্রিয় ব্যাবস্থাপনায় চালু করতে হবে, লিজপ্রথা বাতিল করতে হবে এবং ৫ টি পাটকল সহ সকল পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই,এনএসআই ও সিটিএসবিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা একটু আমাদের পক্ষ থেকে সরকারকে জানান।প্রয়োজন হয় আমরা দু তিন মাস অর্ধেক বেতন নিবো। তার পরও আমরা মিল চালু করবো।আমাদের রাস্ট্রিয় মিল আবার রাস্ট্রিয় ভাবে চালু হবে। তিনি শ্রমিকদের এ আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদের সম্পৃক্ততা কে আবাবিল পাখির সাথে উল্লেখ করেন।এ সময় ছাত্র সমন্বয়ক মো: আলামিন হোসেন তার বক্তব্য বলেন,আমরা আজ স্টার,ইস্টার্ন, জেজেআই মিল এলাকায় শ্রমিকদের সাথে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আজ সব মিল গুলোতে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে।তাদের প্রধান দাবি দুটি রাস্ট্রিয় ব্যাবস্থাপনায় পাটকল গুলো চালু করতে হবে এবং সকল শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে।তিনি বলেন,২০২০ সালের ২ রা জুলাই যখন সৈরাচারী সরকার পাটকল গুলো বন্ধ করে দিয়ে বলে উৎপাদন বন্ধ করেছি মিলত বন্ধ করিনি।তখন তারা মিল বন্ধ করে দেয়।তার পর থেকে আমরা একই দাবিতে আন্দোলনে সংগ্রাম করছি।
আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় হামলা মামলা হয়েছে তা পরও আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।আপনারা জানেন এই খালিশপুরে মজুরি কমিশনের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল তখন মিল শ্রমিক আব্দুর সাত্তার ও সোহরাব হোসেন শহীদ হয়ে ছিলেন।গনঅভ্যুত্থানে সেই সৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। এখন অন্তবর্তি সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আমরা এ সরকারের কাছে প্রত্যাশা করি।আমরা এই সরকারের কাছে আশা করেছিলাম গত তিন মাসের মধ্যে মিল গুলো চালুর ঘোষণা দিবে। কিন্তু চালু করা হয়নি।তিনি আরো বলেন,কিছু দিন পুর্বে মোংলায় বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা এসেছিল। তখন তিনি বলেছিলেন এ মিল গুলো বেসরকারি ভাবে লিজ দেওয়া হবে। আমরা সরকারকে বলতে চাই শ্রমিকদের সার্থ বিরোধী এ লিজ প্রথা থেকে সরে আসতে হবে।আমরা শুনেছি সরকার আমাদের সাথে বসতে চাই। আমরা সরকারকে বলতে চাই টেবিলে বসুন আমরা বুঝিয়ে দিব রাস্ট্রিয়ভাবে এ মিল গুলো চালু করে লাভ করা সম্ভব। তিনি আগামী দিনে আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, ক্রিসেন্ট জুট মিলের আহবায়ক মো:
জাকির হোসেন, সদস্য সচিব মো: শামিম হোসেন, সাবেক শ্রমিকনেতা ইলিয়াস হোসেন, ছাত্র সমন্বয়ক সুজয় শুভ,ইসমাইল হোসেন হ্নদয়, মোশাররফ হোসেন, আলমগীর কাবীর,আব্দুল হাই প্রমুখ। পাটকল গুলো রাস্ট্রিয় ব্যাবস্থাপনায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন খুলনা জোনের প্রধান সমন্বয় কর্মকর্তা মো: গোলাম রব্বানীকে শ্রমিকদের দাবি গুলো কতখানি যোক্তিক এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনে আমাদের বাধা নেই। শ্রমিকদের দাবি গুলো দেখার জন্য সরকারের একটি আলাদা সেক্টর আছে তারা এগুলো দেখবাল করেন। আমরা তাদের দাবি গুলো সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিবো।সরকার কি করবে এটা সরকারের বিষয়। বকেয়া পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে বলেন সরকার খুলনা জোনের ৯ টি পাটকলের মধ্যে ৭ টি পাটকলের হিসাব আমাদের কাছে চেয়েছে আমরা দিয়েছি।আমাদের শ্রমিকদের তিনটা ভাগ স্থায়ী, আস্থায়ী ও বদলি।স্থায়ী শ্রমিকদের সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে অল্প কয়েকজন আইনি জটিলতায় টাকা পাইনি। বদলি শ্রমিকদের কিছু টাকা পাওনা ছিল তা দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি।পরিশেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন আপনারা এসেছিলেন আমরা উর্ধবতন কতৃপক্ষকে জানাবো।
Leave a Reply