মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশঃ চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ১৬টি শয্যার মধ্যে তিনটি শয্যায় সিলিং ফ্যান নেই, তিনটি শয্যার ফ্যান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঘুরছে না। বাকি দশটি শয্যায় রোগীদের মাথার ওপরে নিয়ম করে ফ্যান ঘুরলেও গায়ে বাতাস লাগে না। এতে অত্যাধিক গরমে রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা তীব্র গরমে কষ্ট পেলেও কর্তৃপক্ষের নেই কোনা মাথাব্যাথা। কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালের বাৎসরিক বাজেটে এ বিষয়ে তেমন বরাদ্দ পাওয়া যায় না। তবে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডের ৪, ৮ ও ১২নং শয্যায় ফ্যান নেই, ৫, ৬ ও ১৪নং শয্যায় ফ্যান থাকলেও সেগুলো নষ্ট থাকায় ঘুরছে না। বাকি ফ্যানগুলো ঘুরছে ঠিকই, কিন্তু গতি কম। অনেক দিন ধরে চলার কারণে অধিকাংশ ফ্যানেরই ক্যাপাসিটর নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ফ্যানগুলো থেকে কোনো বাতাসই পাচ্ছেন না রোগী ও তাদের স্বজনরা। এ কারণে অসহ্য গরমের ভেতর দিন কাটাচ্ছেন হাসপাতালের রোগীরা।
নারী ওয়ার্ডের ১৫টি শয্যায় ফ্যান থাকা সত্বেও রোগী বা তাদের আত্মীয়দের কারো হাতে হাতপাখা আবার কারো বেডের পাশে নিজ উদ্যোগে বাড়ি থেকে আনা ছোট টেবিল ফ্যান দেখা গেছে। রোগীকে গরমের যন্ত্রণা থেকে বাঁচাতে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন রোগীর স্বজন। অথচ নিজেই গরমে ঘামতেছেন। এদিকে কিছু রোগী গরম থেকে বাঁচতে নিজেই হাতপাখা ঘোরাচ্ছেন।
১২নং শয্যায় পেটের পীড়া নিয়ে মঙ্গলবার (১৪ জুন) ভর্তি হয়েছিলেন চাগাচর ১নং ওয়ার্ডের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে নুরুল কবির (৫৫)। তিনি বলেন, রোগের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন উল্টো গরমের যন্ত্রণায় ভুগছি।
সাতকানিয়া উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ফোরক আহমদের স্ত্রী মনজুরা বেগম (৩৮) বুধবার (১৫ জুন) ভর্তির পর থেকে আছেন ৮নং শয্যায়। শয্যাটিতে ফ্যান না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, রোগের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে এখানে ভর্তি আছি। তবে ফ্যান না থাকায় গরমের মরণ-যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে।
৪নং শয্যায় ভর্তি থাকা সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নুরুল ইসলামের ছেলে ওসমান আলী (৫২) বলেন, সরকারি হাসপাতালে ফ্যান না থাকাটা খুবই দুঃখজনক। বাধ্য হয়ে হাতপাখার বাতাসে গরমের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির চেষ্টা করছি।
৬নং শয্যায় ভর্তি থাকা হাছনদন্ডী এলাকার নুর আহমদের ছেলে আব্দুল ছবুর (৪৫) বলেন, মাথার ওপর ফ্যান থাকলেও সেটি ঘুরতেছে না। ফলে বাড়ি থেকে টেবিল ফ্যান আনিয়েছি।
এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দোহাজারী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ আহমেদ তানজিমুল ইসলাম বলেন, “হাসপাতালের ফ্যানগুলো নষ্ট থাকার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুমা ভট্টাচার্য্য বলেন, “শীঘ্রই এসমস্যার সমাধান করা হবে।”
Leave a Reply