আজ ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা ছুটলো জাহানাবাদ এক্সপ্রেস


মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা:

খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা ছুটলো জাহানাবাদ এক্সপ্রেস। কুশায়ার চাদর ভেদ করে হিম হিম শীতের মধ্যে যাত্রীরা ছুটে আসছেন খুলনা রেল স্টেশনে। ঘড়ির কাটা সকাল ৬ টা বাজার সাথে সাথে ইঞ্জিনের হুইসেল ও পরিচালকের বাঁশির আওয়াজের সাথে সাথে খুলনা থেকে প্রথম বারের মতো যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করলো জাহানাবাদ এক্সপ্রেস। আজ সকাল ৬ টায় খুলনা রেল স্টেশনের ১ নং প্লাট ফর্ম থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।নতুন রুটে খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে প্রথম যাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্চসিত যাত্রীরা। খুলনা থেকে নতুন এ রুটের বানিজ্যক চলাচলের উদ্ধোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন। উদ্ধোধন কালে তিনি বলেন, প্রথম বারের মত জাহানাবাদ এক্সপ্রেস খুলনা থেকে সকাল ৬ টায় ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে গেছে। পর্যায়ক্রমে এ রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।এক্ষেত্রে হয়ত ৬ মাস সময় লাগতে পারে। রেলওয়ে সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে (কমলাপুর) আনুষ্ঠানিক ভাবে নতুন ঢাকা – খুলনা- ঢাকা এবং বেনাপোল- ঢাকা- বেনাপোল রুটে ট্রেন চলাচল উদ্ধোধন করা হবে।রেল মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা ফায়জুল কবির খান এর উদ্ধোধন করবেন।

এদিকে খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহানাবাদ এক্সপ্রেস সম্পর্কে খুলনা রেলওয়ে ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আশিক আহমেদ বলেন,প্রথম যাত্র‍ায় খুলনা সহ বিভিন্ন রুটে খুলনা স্টেশন থেকে ৫৫৩ টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ট্রেনটিতে মোট ১২ টি বগি রয়েছে। এর মধ্যে ১১ টি যাত্রী বাহী ও ১ টি পন্য বাহী।১১ টিতে আসন সংখ্যা ৭৬৮ টি। প্রথম দিনের রেলের যাত্রী হতে পেরে ভোর রাতে স্টেশন ও স্টেশনের বাহিরে বিপুল সংখ্যক যাত্রী দেখা গেছে।সাহাবাজ নামের একজন যাত্রী বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য আগে থেকে বাসের টিকিট কাটা ছিল। গতকাল রাতে অনলাইনে দেখলাম ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।যে কারনে বাসের টিকিট ক্যানসেল করে ইতিহাসের সাক্ষি হওয়ার জন্য ট্রেনে ঢাকা রওনা দিলাম। হাফসা নামের এক তরুণী বলেন, জাহানাবাদ এক্সপ্রেসের প্রথম যাত্রী হতে পেরে ভীষন আনন্দ লাগছে। এত দিন খুলনা থেকে ঢাকা যেতে অনেক সময় নষ্ট হত।পদ্মা সেতুর নতুন এ রুটে আর সময় নষ্ট হবে না।আফসার নামের এক যুবক বলেন, আমি ঢাকায় থাকি।এ ট্রেনের মাধ্যমে আমরা অল্প সময়ে ঢাকা যেতে আসতে পারবো। বাসের জার্নির চেয়ে ট্রেনের জার্নি নিরাপদ।

এ রুটে নতুন ট্রেন চালু হওয়ায় আমি ভিশন আনন্দিত।পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৩১ কিলোমিটার কমে গেছে।আগে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব ছিল ৪৩০ কিলোমিটার। এখন পদ্মা সেতু হয়ে এ রুটের দূরত্ব হয়েছে ১৯৯ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটে সময় লাগছে মাত্র পৌনে ৪ ঘন্টা।দূরত্ব যাতায়তের সময় ও ভাড়া কম হওয়ায় রেলওয়ের এ উদ্যোগে খুশি সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রা পথে ট্রেনটি নোয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন,লোহাগাড়া, কাশিয়ানী জংশন এবং ভাঙা স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে।ট্রেনে বিভিন্ন শ্রেনীর ৭৬৮ টি সিট রয়েছে। এ ট্রেনে ১১ টি যাত্রীবাহী কোচ ও একটি লাগেজ ভ্যান রয়েছে। এ লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে খুলনা ও আশপাশের জেলার বিভিন্ন ভোগ্য পন্য বা মালামাল ঢাকায় নিতে পারবে।ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত ভাড়া শোভন চেয়ার ৪৪৫ টাকা,সিগ্ধা এসি( এসি চেয়ার) ৮৫১ টাকা ও এসি সিট ১ হাজার ১৮ টাকা।বর্তমানে ঢাকা থেকে খুলনার পথে দুটি আন্তনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ও চিত্রা এক্সপ্রেস চলাচল করে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর