অনলাইন ডেস্কঃ রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী আনজুমানে রহমানিয়া মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেতাগী দরবারের ৩৭তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ আশ্বাস দেন। বেতাগী দরবারের প্রবর্তক শাহসুফি হাফেজ মুহাম্মদ বজলুর রহমান (র.) এর বার্ষিক ইসালে সওয়াব মাহফিলে প্রধান অতিথি এটিএম পেয়ারুল ইসলাম মাদ্রাসাটির ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার হিসাবে বই, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন। এসময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের হাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে লেখা লেখক-গবেষক শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের গ্রন্থগুলো তুলে দেন সম্মেলনের সভাপতি দরবারে বেতাগী আস্তানা শরিফের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ (মা.জি.আ) ও মাওলানা জিয়াউর রহমান আহমদ উল্লাহ।
মাওলানা আরিফুর রহমান রাশেদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য আবুল কাশেম চিশতী। আলোচক ছিলেন অধ্যক্ষ আল্লামা তৈয়ব আলী, আল্লামা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, অধ্যক্ষ আল্লামা আবু তাহের, অধ্যক্ষ আল্লামা আহমদ রেজা নকশবন্দী, অধ্যক্ষ আল্লামা মারেফতুন্নুর, অধ্যক্ষ আল্লামা ইলিয়াস নূরী, পীরজাদা আল্লামা জিয়াউর রহমান আহমদ উল্লাহ, পীরজাদা শাহ আহসান উল্লাহ, পীরজাদা মাহবুবুর রহমান ছফিউল্লাহ, পীরজাদা মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান (পেঠান শাহ), উপাধ্যক্ষ আল্লামা জসিম উদ্দিন আলকাদেরী, আলহাজ্ব এস.এম.শফি, রাজনীতিবিদ এম.সোলাইমান ফরিদ, মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, সংগঠক মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, মাওলানা জসিম উদ্দিন আবেদী, শাহজাদা দোস্ত মোহাম্মদ, মফিজুল ইসলাম সিকদার, মাওলানা আবদুল হাই, গাজী জামাল উদ্দিন, এস এম রেজাউল করিম বাবর, মাওলানা করিম উদ্দিন নূরী, মাওলানা শায়ের মুহাম্মদ ইসহাক, মাওলানা মাহফুজুল হক
আলকাদেরী, মাওলানা আবু জাফর, মাওলানা দিদারুল আলম চৌধুরী, এ এম মঈনুদ্দিন আহমদ, মাওলানা আবদুস শাকুর, মাওলানা নাজিম উদ্দিন, আলমগীর ইসলাম বঈদী, আলহাজ্ব এম এ কুদ্দুস, মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ জুনাইদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন চুনতি দরবারে পবিত্র মেরাজুন্নবী (স.) মাহফিল অনুষ্ঠিত
এসময় আলহাজ্ব এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সরকার বহু পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে মানুষের হাতে হাতে আজ মোবাইল শোভা পাচ্ছে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবিত বিকাশের সুফল পাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু অতিমাত্রায় মোবাইল আসক্তির কারনে শিক্ষার্থীরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা দিন দিন বই বিমুখ হয়ে পড়ছে। এটি শুভ লক্ষণ নয়। তাই শিক্ষার্থীদের হাতে খেলনা হিসেবে দামি মোবাইল না দিয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ জ্ঞানের বাহন বই পুস্তক তুলে দিন। সন্তানরা শিক্ষাঙ্গনে ও বাড়িতে ঠিকমতো পড়াশোনা করছে কিনা সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিন।’
বেতাগী আস্তানা শরিফের মহাত্মা সাধক বুজুর্গ ব্যক্তিত্বগণ মানুষকে দ্বীন ইসলামের দিকে ডেকেছেন, তারা দুনিয়া তালাশ করেননি উল্লেখ করে পেয়ারুল আরো বলেন, ‘পার্থিব উন্নতি নয়, মানুষকে দ্বীন ধর্ম আল্লাহ রাসুলমুখী করাই ছিল বেতাগী আস্তানার সাধকদের জীবন মিশন। আমি জেনে অভিভূত হয়েছি এ দরবারের প্রাণপুরুষ আল্লামা হাফেজ বজলুর রহমান (রহ.) ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অগ্রসংগঠক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বেতাগী দরবার ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল। দেশের স্বাধীনতার জন্য এ দরবারের সাধকরা দুআ-ফরিয়াদ জানিয়েছিলেন। ফলে তারা যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় বরণীয় হয়ে থাকবেন।’
আল্লামা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ বলেন, ‘বেতাগী দরবার অনন্য আধ্যাত্মিক প্রাণকেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিদিন এ দরবারে দেশের স্বাধীনতার জন্য মহান আল্লাহ পাকের কাছে ফরিয়াদ জানানো হতো। যা আজ ইতিহাস স্বীকৃত।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ লেখার জন্য লেখক শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করার দাবি জানান তিনি।
মিলাদ কিয়াম শেষে দেশ জাতির শান্তি সমৃদ্ধি কল্যাণ এবং ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন আল্লামা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ।