চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা নুরুল আবছার চৌধুরীকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পেতে চান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। প্রায় ১৭ বছর পরে আগামি ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দক্ষিণ জেলা আ.লীগের সম্মেলন। সম্মেলনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে নতুন কমিটির সম্ভাব্য পদ প্রত্যাশীদের পাশাপাশি প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঝেও। এরই মধ্যে অনেকেই সরব হয়ে উঠেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। সেখানে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা আসন্ন নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছেন।
সম্প্রতি সাতকানিয়ার আরিফুর রহমান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক নুরুল আবছার চৌধুরী প্রবীণ নেতা হিসেবে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারী।’ তিনি জানান, ‘তৃণমূলের নেতা কর্মীরা দুর্দিনের পরীক্ষিত ও কারাবরণকারী, নির্যাতিত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ও সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সৎ, নির্লোভ ও নিরহংকার জননেতা নুরুল আবছার চৌধুরীকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চাই।’
আরিফুর রহমান তার ফেইসবুক পোস্টে নুরুল আবছার চৌধুরীর পুরানো একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসের উল্লেখ করেন। নুরুল আবছার চৌধুরী তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক থেকে ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে দারুন আলোচনায় এসেছিলেন। সে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-‘যে দলের জন্য আন্দোলন—সংগ্রাম ৫ মাস ১৭ দিন একসাথে কারা নির্যাতন ভোগ, সন্ত্রাস দমন মামলার আসামী, অমানবিক পুলিশি নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি, দেশান্তরিত হওয়াতে বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারিনি, ক্যারিয়ার নষ্ট করেছি সে দল ও আদর্শের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তাই সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হইনি।
৮৯ সালে সাতকানিয়ায় ছাত্রলীগ—শিবির মারামারির অভিযোগ তুলে শিবিরের সন্ত্রাসীরা আমাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ২২২ নং আটক করে হত্যা করতে চেয়েছিল, চাকসু নির্বাচনে ৯০ সালে শিবিরের বিরুদ্ধে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের প্যানেলে এজিএস পদে ও ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে নেতাদের সিদ্ধান্তে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছি এবং ১৪ সালে যখন কেউ প্রার্থী হতে এগিয়ে আসেনি সেই সময় আমিই নির্বাচন করে ৪৫ হাজার ৮৪০ ভোট পেয়ে ২য় হওয়া, নির্বাচনের পর আমার গাছ বাগান জ্বালিয়ে দেওয়াতে (যা বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত) আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
আমিসহ দুর্দিনের কর্মীদের কারো নাম যারা মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানোর প্রয়োজন বোধ করেনি আল্লাহ তাঁদেরকে হেদায়েত করুক। গতবার দলের বর্ধিত সভায় ও আজকে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় কেউ উপস্থিত হতে পর্যন্ত বলেনি। আজতো দলের সুদিন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে নেত্রী ক্ষমতায় আছেন তাতেই আমি খুশী। যে কোনো দুর্দিনে দল আমাদেরকে পাবে ইনশাআল্লাহ। তবে যারা নিজ এবং বিভিন্ন আইডি আমার নামে খুলে লেখালেখি, প্রচারণার মাধ্যমে নির্বাচন করতে উৎসাহিত করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ আমাদের সকলকে কবুল করুক —আমিন।’
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মাস্টার আবুল কাশেম চৌধুরী চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের দক্ষিণের জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগ যখন রাজনৈতিক দৈন্যতায় ভুগেছিলো সেই দুঃসময়ে নুরুল আবছার চৌধুরী ছিলো দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মী। তিনি কখনই পদের জন্য লোভী ছিলেন না। কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত আসতো সেটাকেই তিনি পাথেয় করে রাজনৈতিক পথ পাড়ি দিয়েছেন। এবারের সম্মেলনে তার প্রত্যাশিত সাধারণ সম্পাদক পদটি তাকে দেয়া হলে দলের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হবে।’