অনলাইন ডেস্কঃ ডলারের দামে উল্লম্ফনের কারণে এবং নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের সুনজর না থাকায় আবারো সংকটে পড়েছে দেশের ইস্পাত শিল্প।
২০১৯ সালের আগে বেশ রমরমা ছিলো এ শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা। কোভিড-১৯ মহামারি অভিঘাতের পর বৈশ্বিক অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতির সাথে লড়তে লড়তে আবার উঠে দাঁড়াচ্ছিলো এ শিল্প। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার সামরিক যুদ্ধ, চীন-আমেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় দুুর্দিন কাটছে না এ শিল্পের।
দেশের ইস্পাত শিল্পের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের অগ্রগামী অবস্থান অনেক আগে থেকে। শিল্পটির কাঁচামাল জোগান দেয়া শিপব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোর অধিকাংশ চট্টগ্রামে হওয়ার কারণে এ শিল্পে এগিয়ে থাকেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু গত ৫ বছরে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোর পরিস্থিতিও রুগ্ন। বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন রড-সিমেন্টের ব্যবসায় আইন অমান্যের দায়ে চট্টগ্রামে ২ প্রতিষ্ঠানের শাস্তি
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) সূত্র বলছে, বাংলাদেশে ইস্পাতের কাঁচামালের যে চাহিদা, তার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পাওয়া যায়। বাকি চাহিদা মেটানোর জন্য ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। আর এ আমদানির উৎস ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ। তবে চীনের বাজার অস্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতায় এখন এসব দেশ থেকেও বাড়তি দামে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
ইস্পাত শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ খাতের দিকে নীতি নির্ধারকদের সুনজর নেই। তাই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারা বলছেন, এ খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা হোক। একই সঙ্গে কোম্পানির ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে ঋণপত্রের সুবিধা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এ শিল্পের জন্য বিদ্যুতের দরবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক। এছাড়া উৎসে কর কর্তন ২ শতাংশের পরিবর্তে দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিএম সনদের মাশুল কোম্পানির বার্ষিক লেনদেনের ভিত্তিতে নির্ধারণ না করে নির্দিষ্ট করার দাবি করেছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিল্পটির স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘গত কয়েকবছর ধরে ব্যবসা পরিস্থিতি ভালো না। তার উপর বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে উৎপাদনও কমছে। সবমিলিয়ে এ খাতের প্রতি নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে সুনজর না দিলে সহসা এ শিল্পের সংকট কাটবে না।’