অনলাইন ডেস্কঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম ও শেষ দফার ভোট শেষ হয়েছে আজ শনিবার। ভোটের সর্ম্পূণ ফল ঘোষিত হবে আগামী ৪ জুন (মঙ্গলবার)।
আজ দেশটির ৮টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ৫৭ লোকসভা আসনে ভোট হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই ভারতের ৫৪৩টি লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
গত ১৬ মার্চ লোকসভা ভোটের তফসিল দিয়েছিলো ভারতের নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণ শুরু হয় গত ১৯ এপ্রিল। এবারের নির্বাচনেও বিজয়ী হলে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করবে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)। সে ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নতুন চমক না দেখা গেলে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন নরেন্দ্র মোদি। অধিকাংশ বিশ্লেষণে লড়াইয়ে এনডিএ জোটকে এগিয়ে রাখা হলেও কারও কারও মতে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ২৬ দলের ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইনডিয়া) জোট এবার বিজেপির জন্য লড়াইকে আরো কঠিন করে তুলতে পারে।
ইন্ডিয়া জোটের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খড়গে এবং রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টিও (আপ) এ জোটের সঙ্গে আছে।
আরও পড়ুন নির্বাচনে উত্তপ্ত ভারত
ভারতের স্বাধীনতার পর দেশটির ৭৬ বছরের ইতিহাসের মধ্যে ৫৪ বছরই ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু শতবর্ষীয় দলটি গত দুই নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যায়। দেশটির রাজনীতিতে কংগ্রেসের অবস্থান ধরে রাখার ক্ষেত্রে এবারের নির্বাচন বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় রাজনীতিতে সাংগঠনিক শক্তির খুব একটা পরিচয় দিতে পারেনি। সে তুলনায় বিজেপির কর্মীরা অত্যন্ত সংগঠিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ। টানা তৃতীয়বারের মতো পরাজয় কংগ্রেস ও দলটির নিয়ন্ত্রণকারী নেহরু-গান্ধী পরিবারের জন্য বড় আঘাত হয়ে দেখা দিতে পারে। এমনকি দলটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কার্যক্রমেও এর প্রভাব নেতিবাচক হয়ে দেখা দিতে পারে।
দিল্লিভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের ফেলো রাহুল ভার্মার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের নির্বাচনটি কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে। বড় ধরনের পরাজয় ঘটলে দলটির রাজ্য, এমনকি জাতীয় পর্যায়েও ভাঙন দেখা দিতে পারে, যা দলটির জন্য অত্যন্ত বিপর্যয়কর পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।
এবারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়া ক্ষমতাসীন বিজেপির জন্য কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণ বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। প্রথম চার দফার ভোটগ্রহণে ভোটার উপস্থিতি ছিলো প্রায় ৬৭ শতাংশ, যা ২০১৯ সালের নির্বাচনের প্রথম চার দফার চেয়ে কম। তবে ভোটারদের উপস্থিতি সবচেয়ে কম ছিল পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণে। এতে ভোট দেয় ৬২ দশমিক ২ শতাংশ ভোটার। আর সর্বশেষ ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণে অংশ নেয় ৬৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
ভাষান্তর: দেশ রূপান্তর
Leave a Reply