অনলাইন ডেস্কঃ খরচ বাঁচাতে এবং সংসারে সাশ্রয় করতে এখনও শহর কিংবা গ্রামাঞ্চলে ব্যবহৃত হচ্ছে অনুন্নত চুলা। কিন্তু এসব চুলার কারনে সিওপিডি, স্ট্রোক, হাঁপানী, হৃদরোগসহ অসংখ্য অসুখে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট বলছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৮ হাজারের বেশি মানুষ এ ধরনের চুলা ব্যবহারের কারনে অকালে মৃত্যুবরণ করছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যুঝুঁকির কারণ হলো ধোঁয়া। মায়েরা দীর্ঘ সময় রান্নাঘরে থাকেন। এসময় তারা নিঃশ্বাস নিয়ে ধোঁয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের সাথে যদি বাচ্চা কিংবা অন্যান্যরা সেখানে অবস্থান করে তাহলে তারাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের চুলায় গাছের পাতা-ডাল, কয়লা, কাঠ, ঘুঁটে ও খড় পুড়িয়ে রান্নাবান্না হয়।
সম্প্রতি এ বিষয়ে আলোচনার আয়োজন করে দেশের মূলধারার একটি গণমাধ্যম। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) উন্নত চুলার পরিচিতি ও এটি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব উঠে আসে এ আলোচনায়।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মো. রিজওয়ান খান বলেন, স্থানীয় ও বৈশ্বিক দূষণকে আলাদাভাবে দেখা উচিত না। স্থানীয় দূষণের কথা বলতে গিয়ে আমরা কাঠ-কয়লার কথা বলছি। অর্থাৎ আমরা শতভাগ কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপাদন করছি। আমরা যদি বৈশ্বিক দূষণের প্রেক্ষিতকে একই রেখে স্থানীয় দূষণকে কমিয়ে আনতে পারি, তাহলে স্বাস্থ্যের ব্যয় সংকোচন সম্ভব হবে। কেউ ইনহেলার নেয়, কারো চোখের ওষুধ নিতে হয়, নানা সমস্যা। সেজন্য স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাওয়ার জন্য স্থানীয় দূষণকে কমাতে পারলে তার সুবিধা অনেক। আমি হিসাব করে দেখেছি, জ্বালানির জন্য যা ব্যয় হয়, ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধ খরচ মিলিয়ে ব্যয় তার কাছাকাছি চলে আসে। ইলেকট্রিক কুকিং অ্যাডপ্ট করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আমাদের বিকল্প রয়েছে। আমি আমার ছাদে সোলার পিভি স্থাপন করতে পারি। এ সোলার পিভি তার পুরো জীবনচক্রে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তার উৎপাদনে দূষণের পরিমাণ ৫-৭ শতাংশের বেশি নয়। সেজন্য ইলেকট্রিক কুকিংয়ে যাওয়া স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে লাভজনক। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে যেখানে ইলেকট্রিক কুকিং দিয়েছি, তারা জানিয়েছে, ইলেকট্রিক চুলা দেয়ার পর আমি আর রান্নাঘরে যাই না। রান্নাঘর সাধারণত ঘরের বাইরে থাকে। সেজন্য ঘরের কোনায় এটি স্থাপন করেছি।
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী রান্নার ধোঁয়াজনিত বাৎসরিক ক্ষতির আর্থিক মূল্য ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
তথ্যসূত্র : সংগৃহীত