অনলাইন ডেস্কঃ উপজেলা পরিষদের ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে চূড়ান্ত তফসিল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চার ধাপে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের প্রথম ধাপ আগামী ৮ মে ১৫২ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ২২টিতে ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ২৯তম কমিশন বৈঠক শেষে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তফসিল ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন উপজেলা নির্বাচন
তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ভোট হবে ৮ মে। চার ধাপের নির্বাচনে পরবর্তী তিন ধাপের ভোট ২৩, ২৯ মে ও ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে।’
প্রথম ধাপে চট্টগ্রামের যেসব উপজেলায় ভোট হবে
চট্টগ্রাম বিভাগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর ও সরাইল, কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, লাঙ্গলকোট ও মেঘনা; চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর (ইভিএম) ও মতলব দক্ষিণ (ইভিএম); ফেনী জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী; নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া; লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর, চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ; কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া (ইভিএম) ও মহেশখালী (ইভিএম); খাগড়াছড়ি জেলার মনিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা; রাঙ্গামাটি জেলার সদর, কাউখালী, জুরাছড়ি ও বরকল; বান্দরবান জেলার সদর, রোয়াংছড়ি, থানছি ও আলীকদম।
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে নির্বাচন পরিচালনা বিধি ও আচরণ বিধি সংশোধন করেছে। অতীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের যে তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো, এবার তা দিতে হবে না।
সংশোধিত আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা এখন থেকে জনসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দের পর অন্যান্য প্রচারণা চালাবেন। পূর্বের নিয়মানুযায়ী, ভোট গ্রেহণের তিন সপ্তাহের আগে প্রচার চালাতে পারতেন না। এবার সাদাকালোর সঙ্গে রঙিন পোস্টারও ছাপাতে পারবেন প্রার্থীরা। ভোটের প্রচারের সময়ও বেড়েছে। একইসঙ্গে জামানতের পরিমাণও বেড়েছে এবার।
চেয়ারম্যান পদে জামানতের পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত ৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা হয়েছে। আগের বিধিমালায় নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। সংশোধিত বিধিমালায় ১৫ শতাংশ ভোট না পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নতুন বিধিতে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয় বাবদ অনধিক ২৫ লাখ টাকা এবং মহিলা সদস্য পদে অনধিক ১ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছিলেন, প্রথম দফায় ৪ মে, দ্বিতীয় দফায় ১১ মে, তৃতীয় দফায় ১৮ মে এবং ২৫ মে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন ও চূূড়ান্ত তফসিল ঘোষণা করা হয় আজ।
স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচন করতে হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও (বিএনপি) গেলো ১০ বছর উপজেলা ভোটে দলীয় প্রার্থী দেয়নি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করার পর এবার স্থানীয় নির্বাচনেও অংশ না নেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে রেখেছে দলটি। ফলে এই নির্বাচনেও ভোট লড়াই আওয়ামী লীগ ও তার সমমনা দলগুলোর মধ্যে হবে বলে মন্তব্য করছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা।
তথ্যসূত্র: সংগৃহীত