আজ ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

আজ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী


আজ ২৯ ডিসেম্বর, চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিনের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৫ সালের এই দিনে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের কালা সোনাচরের কাছে শেরেবাংলা ফেরি থেকে পড়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মোনাজাতউদ্দিন বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকতা ছাড়াও ছোটগল্প ও নাটক রচনা, আলোকচিত্র, প্রচ্ছদ ও অলংকরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রেও তিনি কুশলতার পরিচয় দিয়েছেন।

বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ হিসেবে তাঁকে চেনেন সবাই। এ চারণ সাংবাদিক চষে বেড়াতেন গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। খবরের খোঁজে মিশে যেতেন মানুষের মধ্যে। মানুষের কাছাকাছি থেকে, মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র সংগ্রহ করতেন। সে খবর পরের দিন পত্রিকার লিড নিউজ হতো। যা ছিল তাঁর ভিন্ন কৌশল। সে সময়ে কীভাবে গ্রামীণ জীবনকে আরো ফোকাসে আনা যায়, সে জন্য তিনি কিছু যোগ্য শিষ্যও তৈরি করে গেছেন।

১৯৪৫ সালের ১৮ জানুয়ারি রংপুরের গঙ্গাচড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। রংপুরের কৈলাশরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রাজশাহী বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা পাশ করেন। এরপর কারমাইকেল কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। কলেজে পড়ার সময়ই তিনি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চায় মনোযোগী হন। ছড়া-কবিতা-গল্প রচনা এবং সাময়িক পত্রিকার প্রচ্ছদ অঙ্কনে সুনাম অর্জন করেন। বিএ ক্লাসে পড়ার সময় পিতার মুত্যুতে পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসে এবং তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়। ফলে তার পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটে এবং পরে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে বিএ পাশ করেন।

ষাটের দশকে বগুড়া থেকে প্রকাশিত বুলেটিনের মাধ্যমে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি তাঁর। কর্মজীবনে ঢাকার দৈনিক আওয়াজ, দৈনিক আজাদ, দৈনিক সংবাদ ও সর্বশেষে দৈনিক জনকণ্ঠে কাজ করেছেন। তার কাজের ক্ষেত্র ছিল বাংলার মেঠোপথ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। গ্রামের পথে পথে হেঁটে দীর্ঘ জীবনে সঞ্চয় করেছেন অনেক অভিজ্ঞতা। আর এসব অভিজ্ঞতার আলোকেই লিখেছিলেন ১১টি বই।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৭ সালে একুশে পদক (মরণোত্তর) অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়া তিনি দৈনিক সংবাদ-এ প্রকশিত মানুষ ও সমাজ শীর্ষক প্রতিবেদনের জন্য ফিলিপস পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন ইন্সটিউট অফ ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ পুরস্কার, ওয়াশিংটনের পদ্মার ঢেউ বাংলা সম্প্রচার কেন্দ্র সম্মাননা, ফটোগ্রাফিক সোসাইটি অব বগুড়ার সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কার।

তথ্যসূত্র: দেশ রূপান্তর


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর