চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ আজ ধর্মীয় সহিংসতা বিরোধী দিবস। ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে প্রতিবছর ২২ আগস্ট বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে দিবসটি পালন শুরু হয় এবং ২০১৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দিবসটিকে আন্তর্জাতিকভাবে পালনের মনোনয়ন দেয়।
ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা, মতামত ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে জাতিসংঘ। বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ১৮, ১৯ এবং ২০ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ আইনে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষার জন্য বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। এতে কোনো রাষ্ট্রের ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মৌলিক স্বাধীনতার প্রচার ও সুরক্ষার জন্য এবং সেদেশের সরকারপক্ষের জন্য নির্দিষ্ট কিছু কাজ থেকে বিরত থাকার বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলতি বছর দিবসটি উপলক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, দিবসটি পালনের মাধ্যমে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র (ইউডিএইচআর) গৃহীত হওয়ার ৭৫ বছর পরে, মানুষের মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অর্থাৎ ব্যক্তি বা গোত্রের ধর্ম বা বিশ্বাস, পরিবর্তন করার এবং মত প্রকাশ করার অধিকার রক্ষা পেয়েছে।
ইইউ বলছে, বিশ্বের অনেক দেশে এখনও অনেক মানুষ সাম্প্রদায়িক হুমকি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। ধর্মান্ধতার কারণে শারীরিক আক্রমণ, হত্যা, বৈষম্য এবং নিপীড়ন ঘটছে।
ধর্ম বা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সহিংসতার শিকারদের স্মরণে এবং এই আন্তর্জাতিক দিবস পালনের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ধরনের সহিংসতার শিকার সকলকে স্মরণ করতে চায় এবং আবারও বিশ্বের সকল রাষ্ট্রকে ইউডিএইচআর এর ১৮ অনুচ্ছেদকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করার জন্য এবং যে কোনো সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইইউ সুশীল সমাজের সংগঠন এবং ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতার রক্ষকদের কট্টর সমর্থক। এই লক্ষ্য অনুসরণ করে সংস্থাটি চলতি বছর এফওআরবি প্রচার ও সুরক্ষার জন্য কাজ করা সংস্থাগুলিকে সমর্থন করছে এবং সংস্থাগুলোর সহায়তায় অর্থায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশি সংবাদপত্র থেকে সংকলিত আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (ASK) তথ্য অনুসারে, ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮০টি ঘটনা ঘটেছে যেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে ১৯৭টি ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি হত্যা করেছে প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজিব, অভিজিৎ রায়সহ অনেকেকে। এছাড়া অনেক জনপ্রিয় লেখক, ব্লগার নিজের প্রাণ বাঁচাতে দেশের বাইরেও অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন।