অনলাইন ডেস্কঃ দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য তিনজন সাংবাদিক ও একটি গণমাধ্যমের প্রামাণ্য অনুস্টানকে পুরস্কৃত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
এসময় অনুষ্ঠিত ‘গণমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম হাতিয়ার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা।
আরও পড়ুন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় চট্টগ্রামের ২৯ সাংবাদিককে প্রশিক্ষণ দিলো ইউনেস্কো-টিআইবি
বাংলাদেশে ক্ষমতাবানদের ‘শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার’ মানসিকতার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সমালোচক মাত্রই শত্রু- অবস্থান থেকে তাদের স্তব্ধ করে দেওয়া প্রবণতার দেখা যায় এবং ফলে ভয়ের সংস্কৃতি আরো ঘণীভূত হচ্ছে। গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের ওপর এর প্রভাবের কারণে, চাপে পড়ে সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মীরা পেশা পরিবর্তন করছেন, সেলফ সেন্সরশিপের চর্চা করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ, জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে উৎকন্ঠিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’- এর অন্তর্নিহিত এজেন্ডা হলো কখনোই গণতন্ত্র নয়। জনমুখী উন্নয়নকে নিশ্চিত করতে হলে আগে চাই গণতন্ত্র বিশেষ করে বাকস্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তাহলেই উন্নয়ন অর্থবহ হবে।
সংস্থাটির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, বিচারহীনতার মধ্যে আমরা বাস করছি। কেউ বলছেন জিরো টলারেন্স থেকে এখন সহনশীল হয়ে গেছে। আমি এর সঙ্গে যোগ করতে চাই, শুধু সহনশীল নয়, প্রশ্রয় দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, এবার আঞ্চলিক সংবাদপত্র বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রামের একুশে ডটকমের প্রধান প্রতিবেদক শরীফুল ইসলাম, জাতীয় সংবাদপত্র বিভাগে দৈনিক কালের কণ্ঠের সাভার প্রতিনিধি জাহিদ হাসান, টেলিভিশন বিভাগে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মিসবাহ। এছাড়া টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান বিভাগে পেয়েছে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘তালাশ’।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির সহ-সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ) জাফর সাদিক। তিনি বলেন, বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আইন হচ্ছে না, আইন হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। বাক, মত ও চিন্তার স্বাধীনতার বিকল্প শুধু এর পূর্ণ স্বাধীনতাই হতে পারে। কোনো বিরুদ্ধ মত দমনের মাধ্যমে কখনোই কোনো উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে না।
তথ্যসূত্র: বণিক বার্তা