মো. কামরুল ইসলাম মোস্তফাঃ দেড় বছর ধরে শূণ্য পড়ে আছে দোহাজারী ৩১শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জনের পদ। ডাক্তার না থাকায় দাঁত ও মুখগহ্বরের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। অপরদিকে হাসপাতালে থাকা অত্যাধুনিক ডেন্টাল যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত থেকে অকেজো হয়ে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট দোহাজারী হাসপাতালটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগীরা জরুরি চিকিৎসার জন্য এখানে আসেন। স্বাস্থ্যসেবা পেতে দোহাজারী পৌরসভার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী সাতবাড়ীয়া, হাশিমপুর, ধোপাছড়ি, খাগরিয়া, কালিয়াইশ, পুরানগড়, ধর্মপুর, নলুয়া ও আমিলাইষ ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের সরকারি সেবার একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন গড়ে চার শতাধিক রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। এর মধ্যে দাঁতের সমস্যা নিয়েও আসেন অনেকে। কিন্তু ডেন্টাল সার্জন না থাকায় রোগীদের বাইরের প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়।
আরও পড়ুন ১০ মাস ধরে দোহাজারী হাসপাতালে নেই ডেন্টাল সার্জন, বিপাকে রোগীরা
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর ডা. মুহাম্মদ আসিফুল ইসলাম নামে একজন ডেন্টাল সার্জনকে দোহাজারী হাসপাতালে পদায়ন করার পর ডেন্টাল চেয়ারটি অকেজো থাকায় রোগীদের দাঁতের পরিপূর্ণ চিকিৎসা দিতে পারছিলেন না তিনি। ডেন্টাল চেয়ারটি অকেজো থাকার বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ২০২১ সালে তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহিন হোসাইন চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ডেন্টাল চেয়ারটি মেরামত করা হয়েছিলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে। তবে ২০২২ সালের ৩ জুলাই দোহাজারী হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জন ডা. মুহাম্মদ আসিফুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী করার পর তার শূণ্যস্থানে এখন পর্যন্ত কোন ডেন্টাল সার্জন পদায়ন না করায় ডেন্টাল চেয়ারটি অবব্যহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
এদিকে ডেন্টাল সার্জন না থাকায় দন্তাবরক প্রদাহ, মাড়ির প্রদাহ, দন্তক্ষয়, দন্তশূল, দন্তমূলীয় ঘা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে দোহাজারী হাসপাতালে আসা রোগীরা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে থাকা ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে দাঁতের জটিল ও কঠিন রোগগুলো চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এসব চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা নিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অধিক ব্যয় হয় ফলে অসংখ্য হত-দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছেন। এজন্য দ্রুততম সময়ে দোহাজারী হাসপাতালে ডেন্টাল সার্জন পদায়ন করার দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
এব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল ইফরান বলেন, ‘ডেন্টাল সার্জনের বিষয়ে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। শূণ্য পদ পূরনের জন্য প্রতি মাসেই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করি।’