অনলাইন ডেস্কঃ বিশ্বের জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলোকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এসব দেশ জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং কয়লা উৎপাদন ক্রমাগত সম্প্রসারণ করছে। এর মাধ্যমে দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে সীমার বাইরে ঠেলে দিচ্ছে। এটা"সমগ্র মানবজাতির ভবিষ্যৎ সংকটের মুখে ফেলে দিয়েছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি জাতিসংঘ সতর্ক করেছে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমস।
বিশ্ব নেতারা এ মাসের শেষের দিকে কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলনে মিলিত হবেন। এখানে জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হবে। বিশ্বের সহনীয় তাপমাত্রা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
শীর্ষ জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো এরই মধ্যে কার্বনশূন্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এখানে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সীমাবদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের বার্ষিক পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, শীর্ষ ২০ উৎপাদনকারী দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং কপ২৮ আয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাতও। এ দেশগুলো ৪৬০ শতাংশ কয়লা উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে ৮২ শতাংশ বেশি গ্যাস এবং ২৯ শতাংশ বেশি জ্বালানি তেল উৎপাদন করবে। সামগ্রিকভাবে ২০টি দেশের সরকার ১১০ শতাংশের বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করবে।
আরও পড়ুন জলবায়ুর পরিবর্তনে বদলে যাচ্ছে অর্থনীতির অভিমুখ, বাংলাদেশ কতটা লাভবান হচ্ছে এতে
ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসন বলেছেন, ‘জীবাশ্ম জ্বালানি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা কার্বনশূন্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে ব্যাহত করবে। কপ২৮ সম্মেলন থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে কয়লা, জ্বালানি তেল এবং গ্যাসের ব্যবহার থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দিতে হবে। এর মাধ্যমে এ গ্রহের প্রতিটি মানুষ উপকৃত হবে।’
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ। বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী বেশির ভাগ দূষণ, যা পরবর্তী তাপমাত্রা রেকর্ড, আবহাওয়া বিপর্যয় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী জলবায়ু আলোচনায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে এটা স্বীকার করতে নারাজ।
সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ প্রতিবেদন জলবায়ুসংক্রান্ত অসাবধানতার প্রমাণ। কপ২৮ সম্মেলনে অবশ্যই একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে হবে যে জীবাশ্ম জ্বালানির সমাপ্তি অনিবার্য।’
ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক রাজনৈতিক কৌশলের প্রধান হরজিৎ সিং বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কার্বনশূন্য কর্মকাণ্ডে ধনী দূষণকারীদের নেতৃত্ব দিতে হবে।’
ভাষান্তর: বণিক বার্তা