আজ ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকা মিরপুরে জবি ছাত্র হত্যা মামলা-আসামি চট্টগ্রামের শহিদ তানভীরের স্বজনরা! সচেতন মহলের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া


আবদুর রাজ্জাক, ব্যুরো চীফ,কক্সবাজার >>> বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার মিরপুরে স্বৈরাচারের গুলিতে নিহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র ইকরামুল হক সাজিদ।আর এই হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপি ও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত বারবার কারা নির্যাতিত নেতা কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের কয়েক বাসিন্দাকে। ওই আসামিরা চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের গুলিতে নিহত শহিদ তানভীর ছিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠ স্বজন। ঘটনার দিন তারা ছিলেন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ছাত্র-জনতার মিছিলে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারা নানাভাবে নির্যাতিত হলেও তাদের কেন ওই মামলায় জড়ানো হয়েছে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাদের ওই মামলায় জড়ানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে শহিদ তানভীর ছিদ্দিকী হত্যা মামলার আসামি ও কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক তারেক বিন উসমান শরীফের ষড়যন্ত্রে ইকরামুল হত্যা মামলায় ঢোকানো হয়েছে তাদের নাম। অথচ তানভীর ছিদ্দিকীর পরিবার ও স্বজনরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এমনকি এক আসামি রাজনৈতিক মামলায় ১২ বছর কারাবাস শেষে সম্প্রতি মুক্ত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তারা ঘরছাড়া র্ছিলেন। বাড়ির প্রতিটি ইটও খুলে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। জানা গেছে, জবি ছাত্র ইকরামুল হক সাজিদ ৪ আগস্ট মিরপুরে গুলিতে নিহত হন। ৭ সেপ্টেম্বর তার বাবা জিয়াউল হক কাফরুল থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার ২৯নং আসামি জিয়াউর রহমান, ৪১নং আসামি মো. কামাল, ৫৪নং আসামি মিজানুর রহমান মাতব্বর এবং ৬২নং আসামি নাজমুল হোছাইন চট্টগ্রামে গুলিতে নিহত তানভীরের স্বজন। তানভীর ১৮ জুলাই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে শহিদ হন। শহিদ তানভীর ছিদ্দিকীর পরিবারের অভিযোগ, তানভীর হত্যার আসামি তারেক বিন উসমান শরীফ ও নোমান শরীফের সন্ত্রাসী বাহিনী ১৫ বছর আগে তানভীরের বাড়িসহ স্বজনদের শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে এলাকা ছাড়া করে। তাদের ষড়যন্ত্রে শহিদ সাজিদ হত্যা মামলায় ঢোকানো হয়েছে শহিদ তানভীর ছিদ্দিকীর স্বজনদের নাম। এর মধ্যে কামাল তানভীরের চাচা। তিনি কালারমারছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সদস্য। অথচ মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীমের এপিএস। এছাড়া জিয়াউর রহমান জিয়া, মিজানুর রহমান মাতাব্বর ও নাজমুল হোছাইন তানভীরের চাচাতো ভাই। জিয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক, কক্সবাজার জেলা যুবদলের সদস্য এবং কালারমারছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি ছিলেন। এজাহারে তাকে জলদস্যু হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মিজানুর রহমান মাতাব্বর ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত কালারমারছড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতিও। আর নাজমুল হোছাইন উপজেলা যুবদলের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন তানভীরের ৫ স্বজন। শহিদ সাজিদের বোন ফারজানা হক বলেন, সাক্ষীরা আমাদের যেসব নাম বলেছে আমরা তাদের নামেই মামলা করেছি। আমার বাবা মামলার বাদী হয়েছে সেটা ঠিক কিন্তু উনি এসব বিষয় জানেন না। আমরা চাই না নিরপরাধ কেউ মামলায় হয়রানি হোক। কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা এই বিষয়ে একটি লিখত আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে।এদিকে এই হত্যা মামলায় নিরপরাধ বিএনপি ও ছাত্রদলের বারবার কারা নির্যাতিত নেতাদের আসামী করায় সচেতন মহরের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে এই হত্যা মামলা থেকে তাদেরকে তদন্ত পূর্বক অব্যাহতি প্রদানের জন্য শহীদ তানভীর এর পরিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর