ইসমাইল হোসেন, লামা আলীকদম প্রতিনিধি: বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে আড়াই মাইল নামক স্থানে রাত হলেই প্রসাশনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। এতে পাহাড়ের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য দিন দিন বিপন্ন হচ্ছে, ঝুঁকির মুখে পড়ছেন পাহাড়—টিলায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠী। ভারি ভারি যন্ত্রের কোপে সমান করা হচ্ছে পাহাড়। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে আড়াই মাইল নামক স্থানে সাত একর জায়গা জুড়ে দেওয়া হয়েছে টিনের বেড়া। রহস্যজনক টিনের বেড়ার ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেছে, সেখানে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। এলাকাবাসীরা বলছেন, বিদেশি সংস্থা থেকে হাসপাতাল বানানোর জন্য পাহাড় কাটছে স্থানীয় মেম্বার রহিম ও হাসেম। টিলার মাটি যেভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে তাতে আমাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। বর্ষা শুরু হলে যেকোনো সময় পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফাসিয়াখলীর জনৈক বাসিন্দা চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, যেভাবে পাহাড় কাটা শুরু হয়েছে তাতে আমাদের ঘরবাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। আগামি বর্ষায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রহিম মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘অনুমতি কে দিবে! আপনি নিয়ে দিবেন? আপনারা আমরা মিলে সমঝোতার মাধ্যমে তো করে ফেলতে পারি। আর এই জায়গা আমার, আমি হাসেমকে বিক্রি করে দিয়েছি, যেহেতু জায়গা আমার ছিলো পাহাড় কাটা দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাসেমের সাথে যোগোযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমিতো মেম্বার ভাইকে দায়িত্ব দিয়েছি। আপনি ওনার থেকে জেনে নিন।’
ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হেসেন বলেন, ‘আমাকে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে রহিম মেম্বার নাকি রাত হলে পাহাড় ও বালু উত্তোলন করে, আমি বিষয়টি উপজেলা প্রসাশনকে জানাবো।’
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফা জাবেদ বলেন, ‘বিষয়টা জানা ছিল না আপনার থেকে অবগত হয়েছি। পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে আমরা যদি প্রমাণ পাই তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের সহকারি পরিচালক মো. ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ধারা ৬ এর (খ) স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃর্ক সরকারী বা আধা—সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা যাবে না। আমরা যদি প্রমান পাই সংরক্ষিত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিব।’