আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পরিবেশবান্ধব জ্বালানি (সাসটেইনেবল এভিয়েশন ফুয়েল-এসএএফ) ব্যবহার বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বৈশ্বিক উড়োজাহাজশিল্প। এ কারনে উড়োজাহাজে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করছে বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুর সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে দেশটির এয়ারলাইন্সে প্রথমে আংশিকভাবে পরিবেশবান্ধব জ্বালানী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেওয়া হবে।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের পরিবহনমন্ত্রী চি হং তাত এ কথা জানিয়েছেন। সিঙ্গাপুরে উড়োজাহাজ প্রদর্শনীকে সামনে রেখে আয়োজিত চেঙ্গি এভিয়েশন সম্মেলনে চি হং তাত এসএএফের কিছুটা হলেও ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, তার দেশের লক্ষ্য হলো, ২০২৬ সাল থেকে উড়োজাহাজগুলোয় প্রচলিত জ্বালানির পাশাপাশি ১ শতাংশ হারে এসএএফের ব্যবহার করা। আর ২০৩০ সালে তা বাড়িয়ে ৩ থেকে ৫ শতাংশ করা।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সিঙ্গাপুরের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএএস) পরিকল্পনাটি তৈরি করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে কার্বন নিঃসরণ বন্ধের জন্য এসএএফ জ্বালানি ব্যবহার করা জরুরি। এতে কার্বন নিঃসরণ প্রায় ৬৫ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে জরুরি।’
আরও পড়ুন মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনায় জীবাশ্ম নির্ভরতা কমানোয় গুরুত্ব
সিনথেটিক প্রক্রিয়ায় কিংবা জৈব উপকরণ (ব্যবহৃত রান্নার তেল কিংবা কাঠের গুঁড়া) ব্যবহার করে এসএএফ তৈরি করা যায়। বর্তমানে উড়োজাহাজের জ্বালানির বাজারে এসএএফের উপস্থিতি আছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। তবে বেসামরিক
উড়োজাহাজশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ এ হার ৬৫ শতাংশে উন্নীত হবে। কারণ, ওই সময়ের মধ্যে উড়োজাহাজ চলাচল খাতে কার্বন নিঃসরণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা আছে।
তবে এসএএফ জ্বালানির প্রস্তুতকারকদের সন্দেহ, তারা যে জ্বালানি তৈরি করবেন, তা আদৌ বিক্রি হবে কি না। কারণ উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো বলছে, ন্যায্য দামে বিক্রি হওয়ার মতো যথেষ্ট পরিমাণে জ্বালানি সরবরাহ নেই। বর্তমানে উড়োজাহাজের প্রচলিত জ্বালানিগুলোর তুলনায় এসএএফের দাম পাঁচ গুণ বেশি।
উড়োজাহাজ সংস্থা এবং ভ্রমণকারীদের খরচ যেন না বেড়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে এসএএফ কেনার ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সিঙ্গাপুরের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
এসএএফ-ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা এবং এর দামের ওপর ভিত্তি করে ভর্তুকির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। ভ্রমণের দূরত্ব এবং ধরন অনুযায়ীও ভর্তুকির পরিমাণের তারতম্য হতে পারে।
তথ্যসুত্র: বণিক বার্তা