মো. শোয়াইব, হাটহাজারী প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ৪ বছর পর আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসনিম সুলতানা তুহিনকে (১৩) ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুমের মামলার মূল হোতা শাহ নেওয়াজ সিরাজ মুন্নার ফাঁসির আদেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার আদালত। আজ বুধবার (১৯সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিচারপতি মো. হালিমুল্লাহ চৌধুরীর আদালত এ রায় দেন ।
একই সাথে তুহিনকে অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত আসামী মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপরদিকে হত্যা মামলার অন্য ২ আসামী পিতা শাহজাহান সিরাজ (৫২) ও নিগার সুলতানা (৪৫)কে বেকুসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এদিকে ফাঁসির রায়ে পরিবার সন্তুষ্ট। তবে অপর ২ আসামীকে খালাস দেয়ায় ভিকটিম পরিবার হাইকোর্টে আপিল করবে বলেও জানান বাদীর আইনজীবী এড. রিয়াদ উদ্দিন।
২০১৮ সালে তুহিন হত্যার পর থেকে হাটহাজারী উত্তপ্ত ছিল। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবিতে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছিল এলাকাবাসী ও স্কুল শিক্ষার্থীরা । এ কারণে বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জাননায় আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা।
এরপর পুলিশের বিশেষ অভিযানে ধর্ষণ ও হত্যার মূল হোতা মুন্নাসহ অপর সহযোগী দুই আসামী ধরা পড়ে। দীর্ঘ চার বছর আইনি লড়াই শেষে বিচার পেয়েছে স্কুল শিক্ষার্থী তুহিনের পরিবার।
প্রসঙ্গত: ২০১৮ সালে হাটহাজারী পৌরসভার শাহজালাল পাড়ার চতুর্থ তলা থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তুহিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তুহিন হত্যার বিচার চেয়ে স্থানীয়রা থানা ঘেরাও করে। ২০১৭ সাল থেকে মুন্নারে সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তুহিনের। তুহিন, মুন্নাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে তুহিন জানায় হজ শেষে বাড়ি ফেরার পর তার বাবা ও মা তাকে অন্যত্র বিয়ে দিবে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তুহিন চিৎকার শুরু করলে মুন্না তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। লাশ লুকিয়ে ফেলার জন্য প্রথমে খাটের নিচে, পরে বস্তায় ভরে সোফার নিচে রেখে দেয়। ঘটনার দুদিন পর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি বুঝতে পেরে মুন্নার বাবা ও মা পালিয়ে যায়। পরে তুহিনের পরিবার ও স্থানীয়দের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।