‘আমার স্কুলে চাকরি করতে হলে মনে করতে হবে তোমাদের স্বামী দুইটা। একটা বাড়িতে আছে আর একটা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। কারণ আমার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে আমার সকল কথাই শুনতে হবে’। নারী শিক্ষকদের প্রতি এমন উপদেশ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক গওছেল আজম লিটু। তিনি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের হলিদাবগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, অমানবিকতা ও অশ্লীল কথাবার্তার অভিযোগ দিন দিন জোরালো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সি্লপ ফান্ডের অর্থ আত্মসাৎ, প্রশংসাপত্র দেয়ার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন, বিজয় দিবসসহ অন্য দিবসগুলোর নামে বরাদ্দকৃত অর্থ, পুরনো ভবনের লোহার অ্যাংগেল বিক্রির অর্থ, গত দুই বছরে আন্তঃ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও জাতীয় শিক্ষা পদকের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, সততা স্টোরের নামে দোকান দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার ব্যবসা।
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে চাপের মুখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলপনা খাতুন পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে। ওই শিক্ষকের এমন অন্যায় আচরণের বিচার চেয়ে ইতোমধ্যেই পাঁচ শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
এসব বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার আবু সাঈদ মো: শফিউল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর অনেকটাই আমি জানি। শিক্ষিকাদেরকে অশ্লীল কথাবার্তার বিষয়টি সঠিক।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনায়েতুর রশীদ বলেন, বিভিন্ন সময় প্রধাণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মৌখিক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়গুলো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গওছেল আজম লিটু শিক্ষিকাদের অভিযোগগুলো কিছুুটা স্বীকার করেন এবং কিছু অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ছুটি দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় কী ধরনের অসুুস্থতা তা শুনতে চাওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের ভেতরের অনেক বিষয় থাকে।
Leave a Reply