অনলাইন ডেস্কঃ বিপুল সংখ্যক জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র এবং মার্কশিট তৈরির বিশেষ কাগজপত্র ও বায়োডাটাসহ গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব সার্টিফিকেট বিক্রি করা হতো বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রবিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। মামলাটিতে কম্পিউটার অপারেটরসহ আরো ২৫ থেকে ৩০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তি ডিবির তালিকায় রয়েছে।
হারুন অর রশীদ জানান, গত ১ এপ্রিল মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র তৈরি এবং বিক্রির অভিযোগে বোর্ডের সিস্টেম এনালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান ও একই প্রতিষ্ঠানের চাকুরীচ্যুত শামসুজ্জামানের সহকারী ফয়সালকে গ্রেফতার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগ। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বিপুল সংখ্যক জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র এবং মার্কশিট তৈরির বিশেষ কাগজপত্র ও বায়োডাটাসহ গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী কমছে স্কুলে, বাড়ছে কারিগরি ও মাদ্রাসায়
তিনি বলেন, তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৫ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার সদর থানা এলাকা হতে গড়াই সার্ভে ইন্সটিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলিকে গ্রেফতার করা হয়। তারা তিনজনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তাদের দেওয়া জবানবন্দি ও উদ্ধারকৃত ডিভাইস পর্যালোচনা করে ঘটনার সাথে জড়িত কামরাঙ্গীরচরের হিলফুল ফুযুল টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ সরদার গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তাফিজুর রহমানকে ১৮ এপ্রিল মিরপুর থেকে, উত্তর যাত্রাবাড়ীর ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ( মেডিকেল) পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে ১৯ এপ্রিল যাত্রাবাড়ী থেকে ও ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, শামসুজ্জামান ও তার ব্যক্তিগত সহযোগী ফয়সাল গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের অধিক জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বানিয়ে বিক্রি করেছে এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। ফলে ওয়েবসাইটে গিয়ে এগুলো খুঁজলে তা সঠিক পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীর তথ্য সংযোজন, বিয়োজন ও পরিবর্তন সংক্রান্ত আবেদনের ফোকাল পারসন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। সিস্টেম এনালিস্ট বা কম্পিউটার অপারেটররা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রকদের নির্দেশে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে সংবেদনশীল এই কাজগুলো করবেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সংশোধনের তথ্য টাকার বিনিময়ে আদান-প্রদান করেছে কম্পিউটার অপারেটর ও সিস্টেম এনালিস্টদের কাছে। এ রকম প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিপরায়ণ ২৫ থেকে ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
তথ্যসূত্র: বাসস
Leave a Reply