স্পোর্টস ডেস্ক
প্রথম ইনিংসে ৭৭ রানে রংপুর রাইডার্সের ৭ উইকেট তুলে অল্প রানে গুটিয়ে সহজ জয় পাওয়ার স্বপ্নই দেখেছিল ফরচুন বরিশাল। তবে শেষদিকে শামীম হোসেন পাটোয়ারির ঝোড়ো ফিফটিতে ১৪৯ রান তুলে ভালোই চ্যালেঞ্জ জানায় রংপুর। অপরাজিত ৪৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে সেই চ্যালেঞ্জকে মামুলি বানিয়ে বরিশালকে ৬ উইকেটের জয় এনে দেন মুশফিকুর রহিম।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে সাকিবের দলকে হারিয়ে তামিম ইকবালের বরিশাল পৌঁছে গেল বিপিএলের ফাইনালে। আগামী ১ মার্চ শুক্রবার সেই ম্যাচে টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে তারা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ১৫০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা বরিশালের শুরুটা এদিন ভালো ছিল না। ২২ রানের মধ্যেই ফেরেন টুর্নামেন্টে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া তামিম ও ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি পেয়ে ওপেনিংয়ে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ। দুইটি উইকেটই আবু হায়দার রনির। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ৪৭ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন তারা।
দশম ওভারের শেষ বলে ৬৯ রানের মাথায় ফেরেন সৌম্য (১৮ বলে ২২)। শেষ ৬০ বলে তখনো দরকার ৮১ রান। তবে কাইল মেয়ার্স নেমেই বুঝিয়ে দিলেন জয়ের জন্য মামুলি লক্ষ্য এটি। মুশফিকের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়ার পথে ১৫ বলে করেন ২৮ রান। জয়ের পথে ৩০ রান দূরে থাকতে ফজলহক ফারুকীর বলে আউট হন তিনি। তবে অবিচল ছিলেন মুশফিক।
শেষ পর্যন্ত ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন মুশফিক। ৩৮ বলে ৬টি চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আরেক পাশে ১৮ বলে ২২ রান করে অপরাজিত ছিলেন মিলার।
এর আগে বিপর্যয়ে পড়েও ১৪৯ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে রংপুর। টস জিতে রংপুরকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠান তামিম ইকবাল। শুরু থেকেই সাকিবের দলকে চাপে রাখে বরিশাল। ১৮ রানের মধ্যেই শেখ মেহেদী হাসান, সাকিব ও রনি তালুকদারকে ফিরিয়ে দেন বরিশালের বোলাররা। এর মধ্যে মেহেদী ও সাকিবকে সাইফউদ্দিন ও রনিকে ফেরান মেয়ার্স।
চতুর্থ উইকেটে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন রংপুরের দুই বিদেশি ব্যাটার জেমস নিশাম ও নিকোলাস পুরান। মেহেদী হাসান মিরাজের করা নবম ওভারের শেষ বলে ৩০ রানের জুটি গড়ার পর ফেরেন ৩ রান করা পুরান। তার পরের ওভারের প্রথম বলেই নিশামকে ফেরান জেমস ফুলার।
পঞ্চাশের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে হাপিত্যেশ করা রংপুর আরও ২ উইকেট হারায় ৭৭ রানের মধ্যেই। পরের দুই উইকেটও ফুলারের শিকার। দল যখন একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায়, তখন দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে শামীম হোসেন পাটায়ারি ও আবু হায়দার রনি রংপুরের সম্মান তো বাঁচানই, এনে দেন চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। ৩৪ বলে অপরাজিত ৭২ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। যার মধ্যে রনির অবদান মাত্র ১২ রান।
শেষ পর্যন্ত ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন শামীম। ২৪ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান সমান ৫টি চার ও ছক্কায়। নিজের ফিফটি পূরণ করেন মাত্র ২০ বলে। আর দল সেই ৭ উইকেট হারিয়েই পৌঁছায় ১৪৯ রানে।
৪ ওভারে একাই ৫৩ রান দেন ওবেড ম্যাককয়। দারুণ বল করা জেমস ফুলার ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। সমান ওভারে ২৭ রান দেওয়া সাইফউদ্দিনের শিকার ২ উইকেট। ২ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে এক উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সমান ওভারে সমান রান দিলেও কোনো উইকেট পাননি তাইজুল ইসলাম। ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে সফল মেয়ার্সও।