খানিকটা শ্লথ হয়ে পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ডিজিটাল অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কায় ভোক্তা ব্যয় হ্রাসের ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২০২৫ সালে অনলাইন কেনাকাটা বাবদ ২৩৪ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল তা কমে ২১১ বিলিয়ন ডলার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্টারনেট অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কয়েক বছর ধরে সম্প্রসারণের পরেও মন্থর হচ্ছে, যার মানে উদীয়মান ডিজিটাল বাজারগুলোও অর্থনৈতিক বৈরী বাতাস থেকে মুক্ত নয়।
গুগল, টেমাসেক হোল্ডিংস এবং বেইন অ্যান্ড কোম্পানির ওপর এক গবেষণায় উঠে আসে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের অনলাইন ব্যয় চলতি বছর প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে ২০০ বিলিয়ন হবে, যা এক বছর আগের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম। প্রতিবেদন অনুসারে এ অঞ্চলের ইন্টারনেট অর্থনীতি ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে, যা আগের ৩৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পূর্বাভাস থেকে কম।
উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি কোম্পানিগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো পূর্বাভাসগুলো নিম্নমুখী করা হলো।
এমনকি এ অঞ্চলের ভোক্তারা মোবাইল ও অনলাইন পরিষেবাগুলো দ্রুত গ্রহণ করছে। তবে ত্বরান্বিত মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান সুদহার পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য স্থানের বাসিন্দাদের মতো তারাও এখন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী।
কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, কয়েক বছরের ব্যাপক সম্প্রসারণের পর ডিজিটালের প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক হচ্ছে। অধিকাংশ ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান নতুন গ্রাহককে আকৃষ্ট করার চাইতে বিদ্যমান গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মূলত আলিবাবা, লাজাদা ও সি লিমিটেডস শোপির আবাসস্থল। চলতি বছর কোম্পানিগুলোর ই-কমার্স গ্রস মার্চেন্ডাইজের মূল্য ১৬ শতাংশ বাড়বে। তবে মহামারীর সময়ের উচ্চ চাহিদা থেকে তাদের পণ্যের চাহিদা দ্রুত কমবে। কারণ বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও মন্দাবস্থা বিবেচনায় গ্রাহকরা অনেক বেশি সতর্ক হয়ে উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০২৫ সালে অনলাইন কেনাকাটা বাবদ সংশোধিত পূর্বাভাসে ২১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের কথা বলা হয়। যদিও আগের পূর্বাভাসে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের কথা বলা হয়েছে, যা এ অঞ্চলের মোট আনুমানিক ডিজিটাল জিএমভির (গ্রস মার্চেন্ডাইজ ভ্যালু) ৬৪ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুসারে এ অঞ্চলের ডিজিটাল প্রবৃদ্ধির নেতৃস্থানীয় খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম ই-কমার্স, আর্থিক পরিষেবা ও ভ্রমণ। ২০২২ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রায় ২০ মিলিয়ন নতুন ডিজিটাল গ্রাহক যুক্ত হয়েছে।
এ অঞ্চলের বৃহত্তম ডিজিটাল অর্থনীতি ইন্দোনেশিয়া, যেখানে ২০২৫ সালের মধ্যে অনলাইন খরচ ১৩০ বিলিয়ন বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভিয়েতনামের ডিজিটাল অর্থনীতির দ্রুততম বৃদ্ধি ঘটবে। দেশটির ডিজিটাল জিএমভি তিন বছরের মধ্যে বাড়বে দ্বিগুণেরও বেশি।
তথ্যসূত্র: বণিক বার্তা
Leave a Reply