অনলাইন ডেস্কঃ সদ্যসমাপ্ত সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের ৯৫জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের (কাস্টিং ভোট) আট ভাগের এক ভাগ থেকে অন্তত একটি ভোট বেশি পেতে হবে। সে হিসাবে জামানত হারানোর তালিকায় আওয়ামী লীগ ছাড়া রয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পাশাপাশি তৃণমূল বিএনপিরসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা।
১৬ আসনের প্রাপ্ত ফলাফলের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রাম জেলায় মোট ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৯৯৫ জন ভোটারের বিপরীতে মোট ভোট পড়েছে ২৩ লাখ ২৩ হাজার ৮৪১টি। যা মোট ভোটের মাত্র ৩৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। জেলায় ভোট বাতিল হয়েছে ৭৬ হাজার ৮৭০ টি।
চট্টগ্রামের ১৬ আসনে জামানত হারিয়েছেন যে ৯৫ প্রার্থী:
চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মো. ইউসুফ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মো. নুরুল করিম আফছার ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী ইসির নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী ভোট না পাওয়ায় জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ হামিদ উল্লাহ, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির শাহজাদা সৈয়দ সাইফুফদ্দীন আহমদ ও বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে জাতীয় পার্টির এম এ ছালাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নূরুল আক্তার, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ উল্যাহ খাঁন, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মুহাম্মদ নুরুল আনোয়ার, ন্যাশনাল পিপসল পার্টির মোহাম্মদ মোকতাদের আজাদ খান ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আব্দুর রহীম জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড-নগর আংশিক) আসনে জাতীয় পার্টির মো. দিদারুল কবির চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির খোকন চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ আকতার হোসেন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. মোজাম্মেল হোসেন ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. শহীদুল ইসলামের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-নগর আংশিক) বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের আবু মোহাম্মদ শামশুদ্দিন, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির কাজী মহসীন চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ছৈয়দ হাফেজ আহমেদ, তৃণমূল বিএনপির মো. নাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সৈয়দ মোখতার আহমেদের জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সফিক-উল আলম চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মো. ইয়াহিয়া জিয়া চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের স. ম. জাফর উল্লাহর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) জাতীয় পার্টির মুছা আহমেদ রানা, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আহমদ রেজা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ ইকবাল হাছান, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মো. মোরশেদ আলম ও তৃণমূল বিএনপির খোরশেদ আলমের জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-নগর আংশিক) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলাইমান আলম শেঠ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের এস. এম. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ মহিবুর রহমান বুলবুল, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আব্দুন নবী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. কামাল পাশা, তৃণমূল বিএনপির সন্তোষ শর্মা ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে জাতীয় পার্টির সানজীদ রশীদ চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট আওয়ামী পার্টির মিটল দাশগুপ্ত, তৃণমূল বিএনপির সুজিত সরকার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোহাম্মদ নূরুল হুসাইন ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম জামানত খুইয়েছেন।
আরও পড়ুন চট্টগ্রামের ১৬ আসনে জয়ী যারা
চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে জাতীয় পার্টির জহরুল ইসলাম রেজা, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ মাহমুদ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আলমগীর ইসলাম বঈদী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মো. আনিছুর রহমান ও তৃণমূল বিএনপির মো. ফেরদাউস বশিরের জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নারায়ন রক্ষিত ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মো. মহিউদ্দিন জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এম এয়াকুব আলী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কাজি মুহাম্মদ জসীম উদ্দীন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ছৈয়দ মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জেহাদী, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নুরুচ্ছফা সরকার ও তৃণমূল বিএনপির রাজীব চৌধুরীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে জাতীয় পার্টির আবদুর রব চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোছাইন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মো. আরিফ মঈন উদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক ও তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহমদ চৌধুরী জামানত খুইয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে জাতীয় পার্টির আবু জাফর মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আবুল হোসাইন, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ফারুকী, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মোহাম্মদ আয়ুব, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মো. গোলাম ইসহাক খান ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আবদুস সামাদের জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আলী হোসাইন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মুহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ছালেম, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ হারুন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. জসিম উদ্দিন জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির আশীষ কুমার শীল, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এম জিল্লুর করিম শরীফি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মুহাম্মদ আবছার চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোহাম্মদ মহিউল আলম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. খালেকুজ্জামান ও ইসলামী ঐক্যজোটের মো. শফকত হোসাইন চাটগামীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিলো ২ হাজার ২৩টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৬টি আসনে ছিলো ৬৬০টি কেন্দ্র ও উপজেলার ১০টি আসনে ছিলো ১ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্র। জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার আইন অনুযায়ী অন্তত ১৮ হাজার ১৩২ ভোট পেতে হতো প্রার্থীদের।
তথ্যসূত্র: সংগৃহীত