আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শস্যচুক্তি নিয়ে রাশিয়ার অমানবিক সিদ্ধান্তে সারাবিশ্বের মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সম্প্রতি তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এরই মধ্যে ক্ষুধায় ধুকছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। শস্য চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের কারণে আরো দুরাস্থায় ভুগবেন এসব মানুষ।
সোমবার (১৭ জুলাই) রাশিয়া-ইউক্রেনের শস্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে আর তা না বাড়ানোর বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। এরপর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া জানান। গুতেরেস বলেন, মস্কোর এই পদক্ষেপ বিশ্বের সর্বত্র দরিদ্র লোকদের বিপাকে ফেলবে।
নির্বিঘ্নে খাদ্যশস্য রপ্তানির জন্য শস্য চুক্তি নবায়ন করা হবে এমন আশা করছিল জাতিসংঘ। চুক্তি নবায়নের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চিঠিও লিখেছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
যুদ্ধ শুরুর পরপরই কৃষ্ণসাগর দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে খাদ্য শস্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছরের জুলাই মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ‘কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি’ নামে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। এরপর কয়েকবার চুক্তিটি নবায়ন করা হয়েছে এবং এর অধীনে ইউক্রেন প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টন শস্য ও অন্যান্য খাবার সরবরাহ করেছে। সোমবার ছিল চুক্তিটি নবায়নের শেষ দিন। তবে রাশিয়া বেশ আগে থেকেই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মস্কো। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, শস্য চুক্তি থেকে বের হয়ে যাচ্ছে মস্কো।
মস্কো চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোয় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাও (ডব্লিউটিও)। সংস্থাটির প্রধান ড. গোজি ওকনজো ইওয়েলা এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘কৃষ্ণসাগর দিয়ে খাবার, পশু খাদ্য ও সার বাণিজ্য বিশ্বব্যাপী খাবারের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, এর জন্য গরিব মানুষ ও গরিব দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বে।’
তথ্যসূত্র: বাসস