অনলাইন ডেস্ক
চার দিনের সফরে আগামীকাল সোমবার চীন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ বছর পর চীন যাচ্ছেন তিনি। ঢাকা থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন তিনি বেইজিংয়ে বিজনেস ফোরামে যোগ দিয়ে বক্তব্য দেবেন।
আগামী বুধবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বৈঠকে আর্থিক সহায়তা এবং নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরের সময় দেশটির সঙ্গে বেশ কয়েকটি দলিল সইয়ের কথা রয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর বই ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এর চায়নিজ ভাষায় অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন করবেন তিনি।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অশান্তি ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হচ্ছে এ সফরকে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ১২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির তথ্য সরবরাহ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে। সমঝোতা অনুযায়ী, বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণে বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদের বিষয়ে পূর্বাভাস জানাবে চীন। কারণ, ব্রহ্মপুত্র নদের অর্ধেক অংশ রয়েছে চীনে। বাকি অর্ধেক বাংলাদেশ ও ভারতে। উজানের পানিতে দেশে বন্যা হওয়ার শঙ্কা থাকে। চীনের পূর্বাভাস পেয়ে বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। চীনের কাছ থেকে বাণিজ্য সহায়তা ও বাজেট সহায়তার আওতায় ঋণ, বিনিয়োগ সুরক্ষা, ডিজিটাল অর্থনীতি, ব্লু ইকোনমি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সমীক্ষার ঘোষণা ও একাধিক সেতু নির্মাণ ও সংস্কার ইত্যাদি ইস্যু রয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত সমন্বিত প্রকল্পে চীনের সহায়তা চাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফর করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ঐতিহাসিক ওই সফরের সময় ২৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে, ৬টির কাজ চলমান আছে এবং বাকি ৬টির বদলে নতুন প্রকল্প করারও চিন্তা করা হচ্ছে। জানা গেছে, এ মাসের শুরুতে বেইজিংয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ কয়েকটি প্রকল্পের কথা তুলেছে, যা বিবেচনায় নেওয়া যায় বলে উল্লেখ করেছে চীন। প্রকল্প যাচাই-বাছাই শেষ করতে অনেক সময়ক্ষেপণ হয়, ফলে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা নষ্ট হয় বলেও চীনের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।