আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: মীরসরাইতে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে

মীরসরাইয়ে ৯০ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি


মীরসরাই প্রতিনিধিঃ দুয়ারে কড়া নাড়ছে সনাতনী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা। এ নিয়ে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন দুই পৌরসভায় এবার ৯০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পূজাকে ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা নির্মাণের কাজ। প্রতিমা নির্মাণ শিল্পীদের দম ফেলানোর ফুসরত নেই এখন। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে মূল উৎসব। গত বছর ৮৯টি মণ্ডপে পূজা হলেও এবার ৯০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের পূর্ব সাহেরবপুর গ্রামে নতুন একটি পূজা মন্ডপ তৈরি হয়েছে। তবে ৯০টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ১০টিতে হবে ঘট পূজা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূজা উপলক্ষ্যে প্রতিটি মন্দিরের বাড়তি আলোকসজ্জার পাশাপাশি ধনুচি নাচসহ মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। প্রতিটি বাড়িতে তৈরি করা হয় নারিকেলের নাডুসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার। আগামী ২০ অক্টোবর ৫ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা শুরু হবে। উপজেলার পূজা মণ্ডপগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। দুটি থানার অধীনে পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা
হয়েছে।

আরও পড়ুন ঘোড়ায় চড়ে আসবেন মা

সরজমিনে বিভিন্ন পূর্জা মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা শিল্পীদের নির্ঘুম রাত কাটছে। ঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়ার করার সময়ও নেই। রাতদিন এক করে শুধু কাজ চলছে।

মিরসরাই পৌরসভার (১ নম্বর ওয়ার্ড) মধ্য তালবাড়িয়ার সার্বজনীন শ্রী শ্রী রক্ষা কালী বাড়িতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে আসা সুশিল পাল বলেন, ‘আমি বিগত প্রায় ৩০ বছর যাবৎ প্রতিমা তৈরি কাজ করে আসছি। এবছর তিনি প্রায় ১৫টি প্রতিমার অর্ডার নিয়েছেন। সবকটি প্রতিমার মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে রংয়ের কাজ।’

সুশিল পাল আরও বলেন, ‘প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি, খড়, পাট, কাপড়, বাঁশ ও রং ইত্যাদি। কারিগরের সুনিপুণ হাতের কাজ প্রতিমাকে আরো বেশি উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তোলে। কাজের আকার ভেদে একটি প্রতিমা তৈরি করতে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে নিয়ে থাকেন। মধ্য তালবাড়িয়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী রক্ষা কালী বাড়ির মন্দির ও দুর্গা মন্দির (দেবত্ব) কমিটির সভাপতি ও উপজেলঅ পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক

অভি রায় বলেন, ‘দুর্গাপূজা সর্বজনীন। মিরসরাইয়ের মধ্যে আমাদের পূজাটি সেরা পূজা হবে আশা করছি। পূজা উদযাপন কমিটি ও গ্রামের সবার সহযোগিতায় পূজার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।’

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, ‘এবার মিরসরাই উপজেলায় ৪টি ঘট পূজাসহ ৯০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপের সভাপতি-সম্পাদক ও প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

মীরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন বলেন, ‘পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ ছাড়াও আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় গোয়েন্দা নজরদারিতে সিভিল টিম এবং আমাদের সাদা পোশাক পরিহিত পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূজা সম্পন্ন করতে দুএকদিনের মধ্যে সব পূজা মণ্ডপের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা করা হবে। প্রতিটি মন্ডপে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। কয়েকটি টিম উপজেলার মণ্ডপগুলোতে নিয়মিত টহলে থাকবেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর