অনলাইন ডেস্কঃ বৈশ্বিক জলবায়ু পবির্তনের বিরূপ প্রভাবে প্রতিবছর সাইক্লোন, ঘুর্ণিঝর, জলোচ্ছাস, বন্যাসহ নানারকম প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশের ক্ষতি বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ ক্ষতি অপূরণীয়।
তবু জলবায়ুতে ক্ষতির সম্মুখীন বাংলাদেশ ঋণ এবং অনুদানের অর্থে জলবায়ু অভিযোজন করে আসছে। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত প্রি-কপ ২৯ এর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য স্বেচ্ছায় দাতাদের সহায়তার বাইরে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য জরুরিভাবে নতুন, অনুমানযোগ্য এবং পর্যাপ্ত অনুদান-ভিত্তিক অর্থায়ন প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলি ২০২০ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১শ’ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সেটি পূরণ করছে কী না তা আমরা দেখতে চাই।’
এসময় গত তিন বছরের ঘাটতি পূরণ করার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘এই প্রতিশ্রুতি কীভাবে পূরণ করা হবে তা সময়মতো রিপোর্ট করা এবং হিসাব করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্টতা প্রয়োজন। এটা করতে ব্যর্থ হলে বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুন্ন হবে এবং কাজে অগ্রগতি থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘ক্লাইমেট ফাইন্যান্সের নিউ কালেকটিভ কোয়ান্টিফাইড গোল (এনসিকিউজি) অবশ্যই ১শ’ বিলিয়ন টাকা অথবা বছরের শেষ লক্ষ্যের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হতে হবে, ঋণের তুলনায় অনুদানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অনিবার্য প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রকৃত চাহিদা প্রতিফলন ঘটাতে হবে।’
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু অর্থায়নের একটি সংজ্ঞায় একমত হতে দলগুলোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া উচিত যা জলবায়ু এবং অ-জলবায়ু অর্থ প্রবাহের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা সহজতর করে। কপ-২৮ এর ফলাফলের ওপর জোর দেওয়া উচিত যাতে উন্নত দেশগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জলবায়ু অর্থায়নের বিধান এবং গতিশীলতার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দায়ী।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য হিসেবে প্রিকপ মিনিস্টিরিয়ালে উপস্থিত ছিলেন।