অনলাইন ডেস্কঃ শর্ত সাপেক্ষে গারাঙ্গিয়া সোনাকানিয়া আদর্শ বিদ্যালয়লকে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রামের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, ছয়টি শর্ত সাপেক্ষে এই বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শর্তগুলো হলো-১। এক বছরের মধ্যে নিজস্ব জমিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকর সংগ্রহ করতে হবে।
২। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার সাথে সরকারের কোন আর্থিক সংশ্লেষ থাকবে না।
৩। পাঠদানের অনুমতি চাওয়ার পর্বেই অনুমোদিত স্টাফিং প্যাটার্ন অনুযায়ী যোগ্যতা সম্পন্ন প্রধান শিক্ষক শিক্ষ কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করতে হবে।
৪। পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদনকালে ব্যক্তিনামে প্রতিষ্ঠানের নামকরণের জন্য মন্ত্রণালায়ের ১৩ জুলাই ২০২৩ সালের প্রজ্ঞাপনের আলোকে (ক) নিম্ন মাধ্যমিক স্থরের জন্য ১৮ লাখ টাকা এবং (খ) মাধ্যমিক স্থরের জন্য ২০ লাখ টাকা, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের যৌথ স্বাক্ষরে প্রতিষ্ঠানের নামে সঞ্চয়পত্র স্থায়ী আমানত হিসাবে (এফডিআর) জমা করতে হবে এবং প্রমাণক প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করতে হবে।
৫। কোন শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে সরকার অথবা বোর্ড যে কোনো সময় এ অনুমোদন বাতিল করতে পারবে।
৬। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রচলিত অন্যান্য সকল শর্ত মেনে চলতে হবে।
এদিকে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পর নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে এ অনুমতি পেয়ে আনন্দ, উৎসাহ, উদ্দীপনা বিরাজ করছে গারাঙ্গিয়া হাতিয়ারকুলসহ আশপাশের এলাকায়। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকালে আনন্দ র্যালি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন গারাঙ্গিয়া সোনাকানিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ । আনন্দ র্যালি শেষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ নুরুল আবছার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে এই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিন পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি না থাকায় বিভিন্ন স্কুল থেকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হতো। শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর মনে দীর্ঘদিন হতাশা ও আক্ষেপ ছিলো। বিষয়টি বিবেচনা করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করা হলে গত ২৬ জুন মঞ্জরী কমিটির সভা ও ৯ আগস্ট বোর্ড কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুলটি নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে স্থাপনের অনুমতি পেয়েছে। বোর্ডের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হলে, সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে ইনশাহ আল্লাহ ভবিষ্যতে এই স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় এবং কলেজ পর্যায়েও অনুমতি পাবে।’ এসময় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আকতার, স্কুল পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী, স্কুলের জমিদাতা, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সভায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এই স্কুলটি যোগ্য অভিভাবকের অভাবে অবহেলিত। এলাকার কৃতি সন্তান, শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব নুরুল আবছার চৌধুরী বোর্ড সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে স্কুল স্থাপনের অনুমতি এনে দিতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য তার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমরা আনন্দ র্যালির ব্যবস্থা করেছি।’
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোহিনুর আক্তার, শিক্ষার্থীদের পক্ষে রুমাইছা সিদ্দিকা। এসময় স্কুলের জমিদাতা, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ এলাকার বিভিন্ন স্থরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।