অনলাইন ডেস্ক
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রিয় ক্যাম্পাসে বন্ধু, সহপাঠীসহ হাজারো মানুষের অংশ গ্রহণে কোটা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে জাফরপাড়া মাদ্রাসা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন আবু সাঈদের আত্মীয় মো. সিয়াম মিয়া। জানাজায় অংশ নিতে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের হাজারো শিক্ষার্থী। সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন আবু সাঈদ।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আবু সাঈদের মরদেহ তার গ্রামে পৌঁছায়। এলাকার শত শত মানুষ আবু সাঈদের মরদেহ একনজর দেখার জন্য বাড়িতে অপেক্ষমাণ ছিল। মরদেহ গ্রামে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
৯ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন সাঈদ। তাকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ছিল দরিদ্র মা-বাবার। তাকে হারিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে পরিবারটির।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন পেশায় দিনমজুর। তিনি বলেন, অর্থাভাবে কোনো ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারিনি। আবু সাঈদ ছোট থেকেই ছিল অত্যন্ত মেধাবী। সে নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া করে এত দূর পর্যন্ত গিয়েছিল।
ছেলেকে হারিয়ে কাঁদতে-কাঁদতে শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন মা মনোয়ারা বেগম।
এলাকাবাসী জানান, ছোট থেকেই আবু সাঈদ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তিনি স্থানীয় জুনুদেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। পরে এলাকার খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর রংপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন আবু সাঈদ। বেরোবি শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রংপুর শহরের লালবাগ এলাকায় থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যান। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় নিহত হন আবু সাঈদ।