অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শপথ নিয়েছেন এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আরও ১৩ জন।
যাদের মধ্যে ড. আসিফ নজরুল রয়েছেন। শপথ নেওয়ার পর ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমাদের চ্যালেঞ্জটা অনেক বড়।
তিনি বলেন, যে ‘পশু শক্তি’র বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি, আমরা যেন সেই শক্তির মতো হয়ে না যাই। তাহলে আমাদের ছাত্র-জনতা যে অভাবনীয় একটা সুযোগ আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন, যেটা মহান, বলা যায় দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ; সেটার অর্জন ও মাহাত্ম্য ম্লান হয়ে যাবে। সেটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে একটা ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন তৈরি হয়েছে দেশে এবং এটাই স্বাভাবিক।
কারণ ১৫ বা ১৭ বছর একটা স্বৈরাচারী শাসন ছিল। একটা অন্ধকার যুগ ছিল, মানুষের মনে অনেক যন্ত্রণা জমে ছিল। সেটা আউট পাস হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সেটা অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। যেটা কোনো ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক পুলিশ সদস্য, অনেক সংখ্যালঘু মানুষের আর্তনাদ শুনেছি, অনেক স্টোরি আছে, যা আমি নিজে শুনেছি। এটা কোনো ভাবে প্রত্যাশিত নয়। আমাদের ক্রোধ সংবরণ করতে হবে। আইনগতভাবে যারা দোষী আছেন, তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। ’
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত সোয়া ৯টার দিকে বঙ্গভবনে দরবার হলে শপথ বাক্য পাঠ অনুষ্ঠান হয়। এ সময় তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এর আগে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে বঙ্গভবনে পৌঁছান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শপথ অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এরপর ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেওয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ইরান, আর্জেন্টিনা, ফিলিস্তিন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডসসহ আরও কিছু দেশের কূটনীতিকরা।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লা আমান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, খাইরুল কবীর খোকন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, তাবিথ আউয়াল ও মিজানুর রহমান মিনু।
বাম নেতাদের মধ্যে ছিলেন মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রুহিন হোসেন প্রিন্স ও জোনায়েদ সাকি।
এছাড়া জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান, কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) অলি আহমেদ, মাহমুদুর রহমান মান্না ও নুরুল হক নুর এতে উপস্থিত ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের কাউকে অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।