আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিন অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে সামরিক অভিযানের নামে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে শরণার্থী শিবির থেকে সরে যেতে শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। এ অভিযানে একজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে। বুধবার (৫ জুলাই) ইসরায়েলি এক প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে সেনা প্রত্যাহারের খবরটি প্রকাশের সময়ও জেনিন ক্যাম্পজুড়ে গোলাগুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে বিবিসি লিখেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে। ফলে অঞ্চলটিতে দুই দিনের অভিযান শেষ হতে চলেছে।
অভিযানে ইসরায়েলি হামলায় ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি সেনারা জেনিন ছাড়তে শুরু করলেও সেখানে এখনও গোলাগুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
জেনিন থেকে ইসরায়েলি প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর পর ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একজন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। এটি ছিল গত ৩ জুলাই (সোমবার) থেকে শুরু হওয়া অভিযানে শহরে ১২তম ফিলিস্তিনি প্রাণঘাতী।
এরআগে মঙ্গলবার পর্যন্ত এ অভিযানে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত ও তিন হাজারের বেশি বাস্তচ্যুত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছিল ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জেনিনের ডেপুটি গভর্নর কামাল আবু আল-রউফ জানান, হামলা শুরুর পর মঙ্গল পর্যন্ত ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন। প্রায় তিন হাজার মানুষ শরণার্থীশিবির ছেড়েছেন।
এরপর জেনিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং বিমান হামলায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েক বছরের মধ্যে পশ্চিম তীরে এ ধরনের বড় অভিযান চালানো হলো।
ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে আবারও নতুন করে যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল। আর অভিযান প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু সরকারের ভাষ্য, ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী কর্মকাণ্ড’ রুখতেই এই অভিযান। যার মাধ্যমে ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা’ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের দাবি, সাধারণ ফিলিস্তিনিরা লক্ষ্যবস্তু নয়; জেনিনে ও সেখানকার শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত ইরানের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে ধ্বংস করে দিতেই তাদের অভিযান। এদিকে জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।