আজ ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ


ত ১৪ জুলাই ২০২৪ইং দৈনিক সমকাল পত্রিকায় ‘সম্মানীর নামে ১৬ জনের পকেটে ১০ কোটি টাকা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদটি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদটির তথ্যসমূহ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আ.ন.ম. মাওলানা শামসুল ইসলামসহ ষড়যন্ত্রকারীদের মদদে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদক প্রভাবিত হয়েই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে এসব প্রপাগাণ্ডামূলক, বানোয়াট ও কাল্পনিক গল্প দৈনিক সমকালের মত একটি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন। আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ এই ধরণের সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।সংবাদে উল্লেখিত আইআইইউসি টাওয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) এর সহযোগিতায় নির্মিত একটি পৃথক প্রকল্প, এর সাথে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সাধারণ তহবিলের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। আইআইইউসি টাওয়ারের আয় থেকে দেশী-বিদেশী গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদান, চিকিৎসা খাত ও দাতব্য কার্যক্রমে সর্বোচ্চ ব্যয় করা হয় এবং টাওয়ার ব্যবস্থাপনা খরচের মাধ্যমে ব্যয় হয়।সংবাদে প্রকাশিত আইআইইউসি টাওয়ার থেকে ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান ও সদস্য সহ বিভিন্ন দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তার বিরাট অংকের সম্মানি নেওয়ার বিষয়গুলো অতিরঞ্জিত ও ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে প্রচার করা হয়েছে। ২০২৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নৌকা প্রতীক না পাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র মূলকভাবে একই ধরনের নিউজ করানো হয়েছিলো। সেখানে সফল হতে না পেরে ঈর্ষান্বিত হয়ে তারই ধারাবাহিকতায় এখন তারা জামায়াতের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করে আবারও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিশেষ মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ভিত্তিহীন মনগড়া নিউজ করিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।জামায়াতে ইসলামীর অনিয়ম, দূর্নীতির কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০২১ সালের ১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামিক স্কলার, দেশের শীর্ষ স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে আইআইইউসি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করতে নির্দেশনা প্রদান করে। এ প্রেক্ষিতে আইআইইউসি ট্রাস্টি বোর্ডের দায়িত্বভার গ্রহণ করে প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কাজ শুরু করেন। রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর নেতৃত্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ডকে ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রেজিস্ট্রেশন অনুমোদন দেয়। অনুমোদিত ট্রাস্টি বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পর অচলায়তন ভেঙে আইআইইউসিতে সুন্দর একাডেমিক পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে। খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ট্রাস্টি বোর্ড। ঢেলে সাজানো হয়েছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক সেক্টর। শিক্ষা ও গবেষণায় আইআইইউসি খুব দ্রুত শীর্ষে এগিয়ে যাচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়নে হাতে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প। বিভিন্ন ল্যাব সমূহকে আধুনিকরনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে আইআইইউসি সংলগ্ন ও অভ্যন্তরীন সড়ক পিচ ঢালা করা হয়েছে। আইআইইউসি টাওয়ারসহ বিভিন্ন দেশী-বিদেশী বৃত্তির তহবিল থেকে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হচ্ছে স্কলারশিপ। শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় করে নতুন যানবাহন যুক্ত করার মাধ্যমে পরিবহনখাতকে গতিশীল করা হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে বিভিন্ন পর্ষদ ও কমিটি গঠন করা হয়েছে নতুন করে। যথাযোগ্য মর্যাদায় ক্যাম্পাসে উদযাপন করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবস। ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধ কিংবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামই নেওয়ার সুযোগ ছিল না প্রতিষ্ঠার পর, সে ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এখন বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও বঙ্গবন্ধু রিসার্চ সেন্টার ফর ইসলাম এন্ড ইন্টাররিলিয়াজ ডায়ালগ। এ বছরের অক্টোবরে মিশরের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিজ লীগের সহযোগিতায় বিশ্বের প্রায় ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও ডেলিগেটদের উপস্থিতিতে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত, ব্রুনাইয়ের অ্যাম্বাসেডর আইআইইউসি পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও অন্যান্য কার্যক্রমের ভুয়সী প্রসংশা করেন। আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কুয়েতের একটি সংস্থার অনুদানে আইআইইউসিতে কমিউনিটি হসপিটাল তৈরি হচ্ছে।

সংবাদে প্রতিবেদনে বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ বিওটি সদস্যের ব্যাপারে মনগড়াভাবে বিরাট অংকের অযৌক্তিক মাসিক সম্মানী ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃত তথ্য হলো বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ কোন সদস্য আইআইইউসি’র সাধারণ তহবিল থেকে কোন সম্মানী গ্রহণ করেন না।

ট্রাস্টি বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বনামধন্য অডিট ফার্মের মাধ্যমে অডিট করে জানা যায় জামায়াতের নায়েবে আমীর আ.ন.ম শামসুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন টাস্টি বোর্ড দায়িত্ব পালনকালে আইআইইউসির টাকায় জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। দিনের পর দিন আইআইইউসি থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে নগদেই। এই লোপাটের নেতৃত্ব দিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রতিষ্ঠানটির টাকায় এমনকি চালানো হচ্ছিল জামায়াতের বিরুদ্ধে দায়ের করা শত শত মামলার কার্যক্রমের অর্থায়ন। এছাড়া আইআইইউসির শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেওয়া টাকা আদায় করে তা অ্যাকাউন্টে জমা না করা, মোটা অংকের সম্মানী গ্রহণ সহ বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন শামসুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা। এর মধ্যে মোট ১৪ কোটি ৮৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুদকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া তাদের সময়ের ১০ বছরের অডিট করে প্রায় ১২০ কোটি টাকা অনিয়ম ও আত্মসাতের প্রমান পাওয়া গেছে। এভাবে শামসুল ইসলাম ও তার দোসররাই আইআইইউসিকে ‘লুটের মাল’ বানিয়ে ফেলে।সংবাদের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ঋণ নিয়ে গাড়ী কিনেছেন। তিনি অন্য অনেকের মত নিয়ম মোতাবেক একটি ঋণ নিয়েছেন, যার অনেকটাই ইতোমধ্যে পরিশোধিত। তিনি ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহার করেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন, কিন্তু কোন ধরনের সম্মানী গ্রহন করেন না।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গভীর পর্যবেক্ষণে উপলব্ধি হয় যে, কিছু অভ্যন্তরীন ষড়যন্ত্রকারী বাহিরের বিভিন্ন অপশক্তির মদদে বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড ও প্রশাসনের সৃষ্ট সুন্দর একাডেমিক পরিবেশ ও উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট তথ্য প্রচারে লিপ্ত রয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত অপপ্রচারে সংশ্লিস্ট সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

নিবেদক
আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর