হামলার প্রতিবাদে ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পতেঙ্গার বাসিন্দা নুরুল আবছার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বার বার হামলা চালানোর অভিযোগ তোলেন একই এলাকার ইলিয়াছ সওদাগর ওরফে গাভী ইলিয়াছের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে দুপুর ১টায় এই সংবাদ সম্মেলন করেন নুরুল আবছার।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল আবছার বলেন, ‘গত ১৪ নভেম্বর রাত ১২টা ১৪ মিনিটে পতেঙ্গার নেভাল সমুদ্র সৈকত থেকে বাসায় ফেরার পথে ১৬ নম্বর চাইনিজ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওঁৎ পেতে থাকে সন্ত্রাসীরা। একটি সাদা রঙের পিকআপ আমার গাড়ির সামনে ব্যারিকেট দিয়ে গতিরোধ করে এবং আমাকে বামে চাপ দিয়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে।
আমার গাড়ির গতি কমলে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসী গাভী ইলিয়াছের ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী আমার গাড়িতে হামলা করে।’এরপর গাড়ির গ্লাসের ফাঁক দিয়ে পিস্তল তাক করে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করলে আমি কৌশলে গাড়ি ব্রেক করে বামে ভিআই.পি রোডের দিকে টার্ন নিই। সেখান থেকে পতেঙ্গা থানায় পৌঁছায় এবং হত্যাচেষ্টার পরিকল্পিত ঘটনা ওসি আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূরকে জানাই। তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন এবং আমাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন।’ নুরু আবছার আরো বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। যেকোনো সময় আবারও হামলা করে আমার এবং আমার পরিবার লোকজনের প্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে সন্ত্রাসী ইলিয়াছ। চাঁদাবাজি, চোরাকারবারি, সাগর দখল করে ফাড় (জাল বসানোর জায়গা) বেচাকেনা থেকে শুরু করে সব ধরনের অপকর্মের হোতা এই গাভী ইলিয়াছ। তার ভাইসহ সন্ত্রাসী বাহিনীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, র্যাব-৭, বন্দর ডিসি কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত ২৬ সেপ্টেম্বর ডিবি বন্দর পুলিশ চাঁদাবাজির মামলায় গাভী ইলিয়াছকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। কিন্তু আদালত থেকে জামিন নেন তিনি। পরের দিন ২৭ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাটের জেলে মনু মিয়ার দায়ের করা মামলায় পতেঙ্গা থানা পুলিশ জলদস্যু গাভী ইলিয়াছকে আবারও আটক করে আদালতে পাঠায়।’ আমি পণ্য সরবরাহের ব্যবসা করি।
এছাড়া আমি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপ কমিটির সাবেক সদস্য। গত নির্বাচনে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ছিলাম।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগীর ছেলে শাহেদুল ইসলাম সুমন, বড় ভাই আবদুর নুর, ভগ্নিপতি মো. ফারুক, ভাতিজা সাইফুল ইসলাম ও ফয়সাল।
অভিযোগের বিষয়ে ইলিয়াছ সওদাগর ওরফে গাভী ইলিয়াছ বলেন, ‘২০১৮ সালে আমি আবছারের মাদক ব্যবসায় বাধা দিই। সেই থেকে আবছারের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব।’ এই বিষয়ে পতেঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর বলেন, ‘নুরুল আবছার তার ওপর হামলার ঘটনা ফোনে ও মৌখিকভাবে আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু এখনও তিনি লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ করলে ঘটনার অনুসন্ধান করে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’