এইচ.এম.সাইফুদ্দীন
ভূজপুর থানাধীন দাঁতমারা ১নং ওয়ার্ড বালুটিলা এলাকার নদী থেকে দলীয় প্রভাবে ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে দাঁতমারা ১নং ইউপি সদস্য ইউচুপ আলী মেম্বারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ এরই মধ্যে কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের বালু, মাটি বিক্রি করে অভিযুক্ত মেম্বার এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। অভিযুক্ত স্থানীয় মেম্বার ইউচুপ আলী। তিনি হেয়াকো পূর্ব সোনাই গ্রামের মৃত মোঃ ইউনুছ এর ছেলে ও দাঁতমারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সদস্য।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত স্থানীয় মেম্বার ইউচুপ আলী নেতৃত্বে বালু এবং মাটি উত্তোলন করে দিন দিন হয়ে উঠছে বেপরোয়া। মেম্বারের বিরুদ্ধে ভূমি কমিশনে নালিশ করে কেউ পার পায় না। এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসতেছে ১৩/১৪ বছরের পুরাতন মেম্বার হওয়ার কারণে ।
বিগত অনেক বছর যাবত দাঁতমারা ইউনিয়নের হেয়াকোর পশ্চিমে বালুটিলার কালাকুম গ্রামের চর এবং ফসলি জমির অস্তিত্ব বিলীন করে দিয়েছেন স্থানীয় মেম্বার ইউচুপ আলী। গ্রামের সাধারণ মানুষ এবং কৃষক মেম্বারের কাছে অসহায়। শুধু তাই নয়, তার ক্ষমতার দাপটে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। অভিযোগ রয়েছে তার বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কারও কথা বলার সাহস নেই। কৃষকের চষের জমির মাটি লুটে নিলেও কারও কিছু বলার ভাষা নেই। অসহায় হয়ে নামমাত্র মূল্যে চষের জমি ইউচুপ আলী মেম্বারের কাছেই বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। অনেক বছর যাবত তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গ্রহণ করছে না পুলিশ ও প্রশাসন।
উপজেলার ভূমি কমিশনার কামরুল ইসলামকে অভিযোগ করতে গিয়ে অদৃশ্য শক্তির রোষানলে স্থানীয় নুরুল ইসলাম (বাদশা) নামে এক যুবক।
গত ২৭ নভেম্বর বিকালে মেম্বারের নির্দেশে বাদশাকে নুরুন নবী ড্রাইভার তার সন্ত্রাসীদল নিয়ে অবৈধ বালু ও মাটি কাটার কথা কেন ভূমি কমিশনারকে ফোন করে অভিযোগ করেছেন তার জন্য রাস্তায় তাকে লাতি,কিলগুষি মারে আহত করেন। পরে মেম্বারের অফিসে নিয়ে গিয়ে তার ব্যবহারিত মোবাইল,টাকা পয়সা নিয়ে বেঁধে রাখেন।
পরিবার ও প্রশাসনিক সহযোগীতায় উদ্ধার করে মিরসরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ২৮ তারিখ চট্টগ্রাম কোর্টে নুরুল ইসলাম (বাদশা) নিজে বাদী হয়ে মেম্বার ইউসুফ আলী,নুরুন নবী ড্রাইভারসহ ৭জনের এজাহারে নাম, অজ্ঞাত ৫জন উল্লেখ করে মামলা করেন।সিআর মামলা নং ৪৭১/২০২৩ইং।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই মেম্বার মাটি উত্তোলন করছেন! তা না হলে কিভাবে অনেক বছর যাবত মাটি উত্তোলন করছে। স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন সময় মাটি উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ করেছে ঠিকই কিন্তু তা ছিলো লোক দেখানো। প্রশাসনের লোক দেখানো অভিযান স্থানীয়দের মাঝে দিন দিন চরম ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
দাঁতমারা এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, নদীতীরে আমাদের নিজেদের জমিতে চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। কিন্তু অভিযুক্ত মেম্বার ও তার ভাই সম্পর্ক নুরুন নবীর ড্রাইভারের মাধ্যমে যেভাবে চরের ফসলি জমির মাটি ও বালু উত্তোলন করে নিচ্ছে তাতে আমাদের সব জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।
অভিযুক্ত মেম্বার ইউসুফ আলী বলেন, আমি মাটি ও বালু উত্তোলন করি না। কে করে তাও জানি না।
ফটিকছড়ি উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, এর আগে ফটিকছড়িতে বেশ কয়েকবার বালু ও মাটি উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ করেছি। বর্তমানে বালুটিয়া মাটি উত্তোলনের অভিযোগ পেয়েছি, সেটা ফরেষ্টরের জায়গা হওয়ায় কঠোর প্রদক্ষেপ নিতে পাচ্ছি না আমরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন, দাঁতমারায় বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানা নেই। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের থেকে বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply