দেশে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে পাহাড়ের সশস্ত্র দল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি। এ বিষয়ে জঙ্গি সংগঠন গুলোর মধ্যে চুক্তি হয়েছে। আজ শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বান্দরবান র্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার দশজনের মধ্যে তিন পাহাড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। কেএনএফ এর প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের সঙ্গে ২০২১ সালে জামাতুল শারক্বীয়ার আমিরের সমঝোতা হয়। পার্বত্য অঞ্চলে কেএনএফ এর ছত্রছায়ায় জামাতুল আনসার সদস্যদের ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তাদের মধ্যে চুক্তিও হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে তিন লাখ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি কেএনএফ এর সদস্যদের খাবার খরচ বহন করে জামাতুল আনসার।
গ্রেপ্তারকৃরা হলেন– সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মৃত সৈয়দ আবুল কালামের ছেলে সৈয়দ মারুফ আহমদ ওরফে মানিক (৩১), পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার মো. শাহ আলমের ছেলে ইমরান হোসাইন ওরফে সাওন (৩১), ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মৃত গোলাম কিবরিয়ার ছেলে কাওসার ওরফে শিশির (৪৬), সিলেটের বিয়ানিবাজারের ফজলুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আহম্মেদ ওরফে জনু (২৭), বরিশালের মুলাদির নয়ন মৃধার ছেলে ইব্রাহিম ওরফে আলী (১৯), সিলেটের গোলাপগঞ্জের আতিকুল আলমের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাপ্পি (২৩), সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের আব্দুস সালামের ছেলে রুফু মিয়া (২৬)।
এছাড়া বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার লাল মুন সয় বমের ছেলে জৌথান স্যাং বম (১৯), লাল মিন সম বমের ছেলে স্টিফেন বম (১৯) এবং জিক বিল বমের ছেলে মাল সম বমকেও (২০) গ্রেপ্তার করার কথা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে পাহাড়ের তিনজন কেএনএফ এর সামরিক শাখা কেএনএ-এর সদস্য বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। আর বাকিরা জঙ্গি দল জামাতুল আনসারের কর্মী।
তাদের কাছ থেকে ৯টি বন্দুক, ৫০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ৬২টি কেইস কার্তুজ, ৬টি হাত বোমা, ২টি কার্তুজ বেল্ট, ১টি দেশীয় পিস্তল, বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র, ওয়াকিটকি, ও মানচিত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধারের হিসাব দেওয়া হয় র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।
র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্বত্য অঞ্চলে প্রশিক্ষণে থাকা জামাতুল আনসারের সদস্য সংখ্যা ৫০ এর বেশি। সংগঠনটির আমিরের নাম মো. আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। উগ্রবাদী এ সংগঠনে ছয়জন শূরা সদস্য রয়েছেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মারুফ আহমেদ ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা ও কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হাফেজ নাঈমের আপন ছোটো ভাই। তিনি সিলেট অঞ্চলে জামাতুল আনসারের প্রচার শাখার প্রধান এবং সামরিক শাখার দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি।
Leave a Reply