মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশঃ
চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় মোঃ জসিম উদ্দিন নামে এক কৃষকের ৪৪ শতক জমির প্রায় এক হাজার করলা গাছ উপড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাতে দোহাজারী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিল্লাপাড়া এলাকায় শঙ্খ চরে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জসিম উদ্দিন কান্নাচোখে বলেন, "আমি গরীব কৃষক। আমার যা পুঁজি ছিলো ওই ক্ষেতে লাগিয়েছি। পাশাপাশি কয়েক জনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ৪৪ শতক জমিতে এক লাখেরও অধিক টাকা খরচ করে এক হাজার করলা গাছ রোপণ করেছি। অধিকাংশ গাছেই প্রচুর করলার ফুল ধরেছিল। ১০ দিন পর থেকে করলা বিক্রি শুরু করতে পারতাম। করলা বিক্রি করে দেনার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল। এখন দেখছি সবই শেষ।" কারা এই কাজ করেছে জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন জানান, "গাছগুলো কে বা কারা রাতের আঁধারে উপড়ে দিয়েছে তা দেখিনি। আমার সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই।
তবে, গত বুধবার বিকালে কিল্লাপাড়া এলাকার মাহমুদ মিয়ার ছেলে ফারুক তার গরুর জন্য ঘাস কাটতে আমার করলা ক্ষেতে এলে আমি তাকে ঘাস কাটতে নিষেধ করেছিলাম। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দেখে নেবে এবং আমার করলা ক্ষেতের ক্ষতিসাধন করার হুমকি দেয়। এর একদিন পর শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে ক্ষেতে এসে দেখি সবগুলো করলা গাছ গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।" চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আজাদ হোসেন বলেন, "কে বা কারা কৃষক জসিম উদ্দিনের করলা গাছ উপড়ে ফেলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তীতে কৃষি বিভাগ থেকে ওই কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।" অভিযুক্ত ফারুকের পিতা মাহমুদ মিয়া বলেন, "আমি নিজেও একজন কৃষক, তাই কৃষকের কষ্ট আমি বুঝি। একজন কৃষকের কাছে তার ক্ষেতের ফসল সন্তান সমতুল্য। আমার ছেলে যদি প্রকৃতপক্ষে দোষী সাব্যস্ত হয় তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে দোহাজারী পৌরসভার মেয়র আলহাজ মোহাম্মদ লোকমান হাকিম জানান, "জসিম উদ্দিন নামে একজন কৃষক মুঠোফোনে অভিযোগ করেছেন। তার করলা ক্ষেতের ক্ষতিসাধন করার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করতে বলেছি। কাউন্সিলর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে ঘটনাটি যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত ফারুক দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"