অনলাইন ডেস্কঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান লাভলুর বিরুদ্ধে নির্বাচিত হওয়ার পর এ দেড় বছর সময়ের মধ্যেই কোটিপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম, দুর্নীতি করে আয় করা অর্থে নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি, মালিক হয়েছেন অঢেল সম্পদের। বহু অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উল্লেখ করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর তারই ইউপি কার্যালয়ের আটজন ইউপি সদস্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান লাভলুর দাবি এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসনের।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগের লিখিত বক্তব্যে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণ করার এখন পর্যন্ত কোনো সভা হয়নি। তবে আমাদের রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। হতদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান (৪০ দিনের কর্মসূচিতে) চেয়ারম্যান নিজে শ্রমিকের নামের সিম ব্যবহার করেন এবং নিজে ওই টাকা উত্তোলন করেন। পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানের হোল্ডিং থাকা সত্ত্বেও নতুন হোল্ডিং দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই টাকা দিয়ে গ্রামের উন্নয়ন ও বিভিন্ন সংস্কার কাজে ব্যয় করার কথা এবং কিছু অংশ ইউপি সদস্যদের মাঝে ভাতা বাবদ দেওয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা দেননি। মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়ার নাম করে প্রতিজনের কাছ থেকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। প্রতিটি নলকূপ প্রদানে ২৫-৩৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। এলজিএসপি ও ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তার টাকা তার ইচ্ছেমতো ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপি, উন্নয়ন সহায়তাসহ অন্যান্য সব বরাদ্দ তার মতো করে তিনি আত্মসাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে জনপ্রতি ২-৫ হাজার টাকা ও ভিজিডি থেকে ৫-৮ হাজার টাকা আদায় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টিসিবির পূর্ববর্তী নামের তালিকা হালনাগাদ করার জন্য বলা হলে চেয়ারম্যান নিজেই তালিকা সংশোধন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে জমা দিয়েছেন এবং এখানে জনপ্রতি করেছেন বাণিজ্য।
একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান লাভলু নির্বাচনে জয়ের পর এই দেড় বছরে অন্তত কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার অনিয়ম, দুর্নীতিতে আমরা ইউপি সদস্যরা দিশেহারা। এক প্রকার আমাদের জিম্মি করে আমাদেরকেও তার দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত করতে চান। তাই বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। মাধবখালী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান (লাভলু) সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলছেন তা সব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে তারা এসব করছেন।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য কাজ চলছে।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর