মাইক্রোসফটের মুনাফা চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ১৪ শতাংশ কমেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত আয়-ব্যয়ের উপাত্তে মাইক্রোসফট জানায়, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তাদের নিট আয় বা মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার। ওয়াল স্ট্রিটের পূর্বাভাসের চেয়ে আয় বেশি হলেও গত বছরের চেয়ে বেশ কমেছে। ব্যক্তিগত কম্পিউটার (পিসি) বিক্রিতে ধস, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, ইউক্রেন সংকট ও করোনার অব্যাহত প্রভাবে কোম্পানিটির আয়ে প্রভাব পড়েছে। খবর এপি।
কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্লেষকরা বলছিলেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মাইক্রোসফটের প্রবৃদ্ধি পাঁচ বছরের সর্বনিম্নে দাঁড়াতে পারে। তারই ছাপ দেখা যাচ্ছে গতকাল প্রকাশিত আয়-ব্যয়ের উপাত্তে। ওয়াশিংটনের রেডমন্ডভিত্তিক কোম্পানিটি গতকাল জানায়, তৃতীয় প্রান্তিকে মাইক্রোসফটের মোট আয় হয়েছে ৫ হাজার ১০ কোটি ডলার, গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে যা ১১ শতাংশ বেশি।
উইন্ডোজ সফটওয়্যারের ওপর দাঁড়িয়ে মাইক্রোসফটের পিসি খাত বড় আকারের ধাক্কা খেয়েছে। অনেক গ্রাহকই যেহেতু করোনাকালে পিসি কিনেছে, তাই জটিল অর্থনৈতিক সংকটের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন করে তা কেনা কমিয়ে দিয়েছে। পিসি নির্মাতা কোম্পানির কাছে উইন্ডোজের লাইসেন্সিংয়ের মাধ্যমে বড় অংকের আয় করে মাইক্রোসফট। কিন্তু গত প্রান্তিকে এ ধরনের লাইসেন্সিং থেকে মাইক্রোসফটের আয় ১৫ শতাংশ কমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাজার বিশ্লেষক সংস্থা গার্টনার জানায়, তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক পিসি বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে পিসি বিক্রির উপাত্ত রাখা শুরুর পর যা সর্বনিম্ন বিক্রি বলে জানায় গার্টনার।
গতকাল বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক কনফারেন্স কলে মাইক্রোসফটের মুখ্য আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) অ্যামি হুড জানান, গত প্রান্তিকে যে নেতিবাচক ইস্যুগুলো প্রভাব ফেলেছে নিকট ভবিষ্যতে তা প্রশমনের সম্ভাবনা নেই।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মাধ্যমে উইন্ডোজের আয় হ্রাস পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে মাইক্রোসফট। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ক্লাউড পরিষেবা থেকে মাইক্রোসফটের আয় ২০ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৩০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে খবর প্রকাশ হয়, মাইক্রোসফট তাদের বিভিন্ন বিভাগ থেকে হাজার খানেক কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে। গত জুলাইয়ে মাইক্রোসফটের এক মুখপাত্র বলেছিলেন, মন্দা পরিস্থিতি সামলাতে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার কর্মীর মধ্য থেকে ১ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে। তাছাড়া মন্দার ঝুঁকির মধ্যে তাদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াও খানিকটা ধীরগতির হবে।