ইসমাইল হোসেন, বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বান্দরবানের লামায় এক মাদ্রাসা শিক্ষককে মানহানি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আইনী প্রতিকার চেয়ে ওই শিক্ষক লামা থানায় এজাহার দাখিল করলে, তাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে বিবাদীপক্ষ ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে।
মানহানির শিকার ওই শিক্ষক মো. আলা উদ্দিন লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড মিশন পাড়ার মৃত ওয়াহেদ হোছাইনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ও হোমিও চিকিৎসক। এই ঘটনায় মাস্টার আলা উদ্দিন বাদী হয়ে করা মামলায় মিশন পাড়ার বাসিন্দা মৃত আমির হোসেন এর ছেলে আবুল কালামসহ ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
এদিকে মামলার সূত্র ধরে থানার নির্দেশে ঘটনার তদন্তে গিয়েছেন আজিজনগর ক্যাম্পের আইসি ও পুলিশের উপ-পরিদর্শক নাছির উদ্দিন। তিনি সাংবাদিককে বলেন, ‘তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
লামা থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১নম্বর বিবাদী আবুল কালামের কাছ থেকে বাদী আলা উদ্দিন তার ক্রয়কৃত ১০ শতক জায়গায় ঘর নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট ও ইট বালি সংগ্রহ করেন। দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ পুরোপুরি দখল বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো ঘর নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে বিবাদী। ইতিমধ্যে লোক মারফত আলা উদ্দিনের কাছ থেকে বিবাদী আবুল কালাম এক লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে পার্শ্ববর্তী তার প্রজেক্টের পানি ভিটার উপর দিয়ে ছেড়ে লক্ষাধিক টাকার নির্মাণ সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি করে। সম্প্রতি মিশনপাড়া এলাকায় বিদ্যুতের উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন স্থানে পিলার স্থাপন করা হচ্ছে। এই কাজে মামলার বিবাদী আবুল কালামসহ স্থানীয় আবু জাফর, কামরুল ইসলাম কানন ও আলী শরিফ নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা প্রতিঘরে মিটার প্রতি ৫-৭ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করছে। মিটার না থাকা সত্ত্বেও মাস্টার আলা উদ্দিনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবী করা হয়। মাস্টার আলা উদ্দিন টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে মামলার বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীসহ আরও কয়েকটি পরিবারের চলাচলের রাস্তার মাঝখানে জোরপূর্বক পিলার স্থাপন করে। এ বিষয়ে গত ১৫ অক্টোবর বাদী চকরিয়া বিদ্যুৎ অফিসকে সমস্যার বিষয়ে অবহিত করেন। এতে বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে মাস্টার আলা উদ্দিনকে গালমন্দ করে এবং টানা হেঁছড়া করে মাটিতে ফেলে দেয়। এসময় বিবাদীরা বাদীকে কিলঘুষি মারে এবং জুতাপেটা করে।
বাদী মাস্টার আলা উদ্দিন এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘এ ঘটনায় আমার চরম মানহানি হয় এবং তারা আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে জানমালের হুমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এছাড়া আমার ক্রয়কৃত আরেকটি জায়গার মাঝখানে খুঁটি স্থাপন করে বিবাদীরা পরিকল্পিতভাবে আমার ক্ষতি করতে চাচ্ছে।’
এই বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত আবুল কালামের সাথে। তিনি চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘আমি জায়গা বিক্রি বাবদ মাস্টারের কাছে টাকা পাবো। সে আমার বাকী টাকা না দিয়ে আমাকে পলাতক দেখিয়ে গোপনে মিস মামলা করে জায়গা তার নামে নামজারি করে নেয়। এই বিষয়ে জানতে চাইলে মাস্টারের সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়। মারধর বা হুমকি-ধমকির কোন ঘটনা ঘটেনি।’