অনলাইন ডেস্কঃ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজে অনেকগুলো ত্রুটি ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও মুখপাত্র এম এ লতিফ এমপি। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে লালখানবাজার সহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের মান ও ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর প্রকল্পটির অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় খতিয়ে দেখতে সরেজমিন পরিদর্শন করেছে এ তদন্ত কমিটি।
এসময় তদন্ত টিমের প্রধান এম এ লতিফ বলেন, একটি নিউজ পেপারে খবর বেরিয়েছিল যে দুটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে এই কনস্ট্রাকশনে কোনো ত্রুটি আছে কি-না, কোনো অনিয়ম আছে কি-না, সেটি দেখার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি একটি উপ কমিটি করে দেয়।
সেই উপ কমিটির প্রধান হিসেবে আমার সহকর্মী সংসদ সদস্যদের নিয়ে পরিদর্শনে এসেছি। যেখানে ফাটলের কথা উঠেছে, সেখানে আমরা দেখেছি। আমাদের চোখে ফিনিশিং কাজেরও অনেক ত্রুটি ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করবো, তাদের মতামত নেওয়ার পর প্রতিবেদন জমা দিবো। যাদের ভুল-ত্রুটি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই প্রতিবেদনে থাকবে।
আরও পড়ুন এক্সপ্রেসওয়ের প্রকৌশল চ্যালেঞ্জ বিষয়ে চসিক-সিডিএর আলোচনা
এর আগে গত ১০ জুন সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন: বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজিবুর রহমান এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্য পারভীন জামান। প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সভা করেন উপ-কমিটির সদস্যরা।
নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র্যাঙ্কিন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি চট্টগ্রাম নগরের ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’ এর উদ্বোধন করেছিলেন। ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে নগরের লালখান বাজার থেকে শুরু হয়ে পতেঙ্গায় গিয়ে শেষ হয়েছে। মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখনো র্যাম্পের কাজ সম্পন্ন হয়নি।
২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। এখন ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। খরচ বেড়েছে ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সংশোধিত প্রকল্প একনেকের সভায় অনুমোদিত হয়। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কাজই শুরু করেছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। পরে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ২৪