ইকবাল হোসেন, সাতকানিয়াঃ কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে সাতকানিয়ার বিদ্যুৎ ও কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গতকাল সোমবার (৬ মে) বিকালে ঘটে যাওয়া ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগের দুর্ভোগ এখনও ভর করে আছে উপজেলাবাসীকে।
ঝড়ের সাথে বজ্রপাত হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। কেঁওচিয়ার নয়াখাল, সোনাকানিয়া বাংলাবাজার, আমিলাইষের দক্ষিণ ও পশ্চিম আমিলাইষ, পুরানগড় ও কাঞ্চনায় বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে, বিকল হয়েছে মিটার ও ক্যাবল ছিড়েছে। কিছু কিছু স্থানে গাছ উপড়ে সড়কে পড়েছে।
ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে উপজেলার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর মধ্যরাতে পিডিবির কিছু লাইন চালু করা হলেও ঝড়-বাতাসে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর প্রায় ৭৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে।
আজ মঙ্গলবার (৭ মে) পল্লী বিদ্যুত সূত্রে জানা গেছে, ৬টি ফিডারের ২টি ফিডার দুপুরের আগে চালু হয়েছে, এতে কিছু গ্রাহক বিদ্যুৎ পাচ্ছে। তবে এখনও অধিকাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎসেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
আরও পড়ুন সাতকানিয়ায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ সাতকানিয়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. ইব্রাহিম জানান, ‘এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ২৩টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। ৬৩টি স্থানে তার ছিঁড়ে গিয়ে ৫৭টি মিটার নষ্ট হয়েছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।’
এদিকে কালবৈশাখী চলাকালে কয়েকশ বিঘা জমির পাকা ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। ধান কাটার ঠিক আগ মুহূর্তে পাকা ধানগুলো হেলে পড়ায় ফলন ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। তবে তেমন সমস্যা না হলেও কৃষকদের হেলে পড়া ধান দ্রুত কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। কিছু সবজি ক্ষেতের মাচা ভেঙ্গে গেছে। মাচাগুলি ঠিক করে দেওয়া হলে ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না। বাতাসে কিছু ধান হেলে পড়েছে। এবার উপজেলায় ৭ হাজার ৩শ হেক্টর বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এরইমধ্যে প্রায় ৫৮ ভাগ জমি থেকে ফসল উঠে গেছে। ভবিষ্যতে আবারো কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। এর আগে মাঠ থেকে ফসল উঠে না গেলে কৃষকের অনেক ক্ষতি হবে।’
Leave a Reply