মো. ইকবাল হোসেন, সাতকানিয়াঃ উপজেলায় একটি কৃত্রিম হৃদের বাধঁ কেটে দেওয়ায় পানির অতিরিক্ত চাপে এবং ঢলে স্থানীয় ৬০টি বাড়িঘর, অসংখ্য পুকুর-ফসলি জমি এবং রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়েছে। শনিবার (৩ জানুয়ারী) রাতে উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া এলাকায় কৃত্রিমভাবে গঠিত বাঁধ কেটে দেওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা হঠাৎ প্লাবিত হয়।
[caption id="attachment_24304" align="alignnone" width="451"] ছবি: বাঁধের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়িবনবিভাগের নির্দেশনায় এ বাঁধ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। লোহাগাড়ার উজানে নির্মিত ওই কৃত্রিম বাঁধ কাটার ফলে সোনাকানিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকাসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে। ভোররাতে পানির তীব্র স্রোত ডলু খাল উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া, সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সাইরতলী, তাঁতীপাড়া, কুতুবপাড়া, মঙ্গলচাঁদ পাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে স্লুইচ গেইটটিরও।[/caption]
আরও পড়ুন সাতকানিয়াকে স্মার্ট উপজেলায় রূপান্তর করতে চান নুরুল আবছার চৌধুরী
বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করলে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকী, কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা।
চাটগাঁর সংবাদের সাথে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, ‘কোনোরকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই বাঁধটি কেটে দেওয়ার ফলে দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাঁধটি কাটার আগে প্রশাসনকেও জানানো হয়নি। ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ আজকের মধ্যে দ্রততার সাথে নিরুপন করে জানাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি চক্র কয়েক বছর আগে হ্রদটি তৈরি করেছিলো। লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়ন ও সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকার ওই ছড়ায় কৃত্রিম বাঁধ দিয়ে হ্রদটি নির্মিত হয়। এরপর ন্যাচারাল লেক নাম দিয়ে সেখানে চক্রটি মাছ চাষ শুরু করে। সম্প্রতি বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। শনিবার বিকালে স্থানীয়দের সচেতন না করেই কৃত্রিম হ্রদটির বাঁধ কেটে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে ছড়া হয়ে পানি ডলু খালে প্রবেশ করে।
সোনাকানিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এলাকার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট এবং ফসলিজমি। আমরা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসনের অনুরোধ করছি।’
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাস চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘বাঁধটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হওয়ায় আইন প্রয়োগ করা হয়েছে।’