আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: জাতীয় ইমাম সম্মেলন ২০২৪ এ বক্তব্য রাখছে ধর্মমন্ত্রী

ইমামেরা হলো সমাজের চেঞ্জ এজেন্ট: ধর্মমন্ত্রী


অনলানে ডেস্কঃ ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, ইমামেরা হলো সমাজের চেঞ্জ এজেন্ট। মানুষকে সঠিক পথের নির্দেশনা দেওয়া এবং খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ইমামগণ অনুঘটক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আজ বুধবার (৫ জুন) সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে জাতীয় ইমাম সম্মেলন ২০২৪ এর প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। এবারের সম্মেলনে জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায় থেকে ২৬৫ জন শ্রেষ্ঠ ইমামকে পুরস্কৃত করা হয়।

এসময় ধর্মমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মসজিদ রয়েছে। প্রতি শুক্রবার তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি মানুষ মসজিদে সমবেত হয়ে থাকে। এই মানুষগুলোকে যদি আমরা সঠিক পথে আনতে পারি তাহলে দেশটাকে বদলে দেওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর এই মানুষগুলোকে বদলে ফেলার জন্য আমাদের প্রয়োজন প্রশিক্ষিত ইমাম। ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন নীতি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে ইমামদের পরিপূর্ণ ধারণা থাকা প্রয়োজন। আর এই প্রশিক্ষিত ও দক্ষ ইমাম গড়ে তোলার লক্ষ্যেই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিগুলো কাজ করে যাচ্ছে।

ফরিদুল হক খান বলেন, একজন ইমাম যেমনিভাবে নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত সম্পর্কে আলোচনা করবেন, তেমনিভাবে সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি, নারী নিযাতন, যৌতুক, বাল্যবিবাহ, চাঁদাবাজি, মজুতদারী, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ প্রভৃতি সামাজিক ব্যাধি সম্পর্কেও মুসল্লীগণকে সচেতন করে তুলবেন।

আরও পড়ুন যাকাত বোর্ডকে শক্তিশালী করা সম্ভব হলে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত হবে : ধর্মমন্ত্রী

ফরিদুল হক খান বলেন, একজন ইমাম যদি প্রকৃতঅর্থেই ইমাম হয়ে উঠতে পারেন তাহলে তিনি সমাজকে বদলে ফেলতে পারেন। সমাজের সকল অসঙ্গতি, অনাচার, পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মানুষকে সত্য-সুন্দরের পথে ফিরিয়ে আনতে পারেন। একটি সমাজকে আদর্শ সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। দেশ ও জাতির সামগ্রিক কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখতে পারেন। একটি সমাজের সকল ইতিবাচক পরিবর্তনে ইমামগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন।

ইমামদের উদ্দেশে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ইমামতি খুবই সম্মানজনক ও মহান একটি দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও ইমামতি করেছেন। তারপর তার সাহাবি ও খোলাফায়ে রাশেদিনগণও এই মহান দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসলামি সমাজে ইমামদেরকে অত্যন্ত সম্মান করা হয়। দ্বীনী বিষয়াদি ছাড়াও সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন নানা বিষয় নিয়ে ইমামদের শরনাপন্ন হয়ে থাকে। মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার ক্ষেত্রে ইমামদের চেয়ে বেশি সুযোগ অন্য কোন শ্রেণির মানুষের নেই।

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে সরকারের নানা প্রদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইমাম ও আলেম-ওলামা সমাজকে সম্মানজনক জায়গায় অধিষ্ঠিত করতে চাই। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ যেন তাদের সম্মান করে, শ্রদ্ধার চোখে দেখে সেই জায়গায় ইমামদেরকে সরকার আসীন করতে চাই। ইমামদের সম্মানজনক জীবিকার সংস্থান করতে চাই। তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে চাই। একারণেই মসজিদের  ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে তিনি ২০০১ সালে ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন। এই ট্রাস্ট হতে ইমাম-মুয়াজ্জিনগণকে সুদবিহীন ঋণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মহা. বশিরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য শায়েখ আল্লামা খন্দকার গোলাম মাওলা নকশাবন্দী ও সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশিদ বক্তৃতা করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর