চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ খালেদা জিয়া শুধু এই উপমহাদেশের নন, এশিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন নেত্রী মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বন্দি করা হয় ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে। এখনও তিনি বন্দী আছেন। দ্রুত তাকে মুক্তি দিতে হবে। এখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আল্লাহ না করুন, তার কিছু হলে সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে পদযাত্রা-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি’র মহাসচিব।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবিতে এই পদযাত্রার আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে কাকরাইল মোড় ও শান্তিনগর মোড় হয়ে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয় পদযাত্রা।
এদিকে একই দাবিতে শনিবার সারা দেশে মহানগর, জেলা উপজেলা পর্যায়ে পদযাত্রা করছে বিএনপি।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। যেই দুই কোটি টাকার অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেই টাকা এখন ৮ কোটি টাকা হয়েছে। একই ধরনের মামলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে হয়েছিল। কিন্তু তাদের শুধু মুক্তিই দেওয়া হয়নি, মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমান সরকার অসাংবিধানিক ও অবৈধ মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ১৫ বছর ধরে জনগণের কাঁধে চেপে বসে আছে। এরা এখন গণতন্ত্রের জন্য নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনও সময় আছে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করবেন না, বাসা বাড়িতে হানা দিবেন না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। অবিলম্বে এক দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ইস্পাতকঠিন মনোবল ধরে রেখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমরা আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। তাকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা মামলা-হামলাবাজ সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে এখানে পদযাত্রা করছি। এদের বিদায় নিতে হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তিনি কোনও অন্যায় করেননি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বিচারিক আইন উপেক্ষা করে সাংবিধানিক আইন উপেক্ষা করে জেলে পাঠানো হয়েছে। শুধু মানুষের ভোটাধিকার লুটে নিয়ে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এটা করা হয়েছে। আজ খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত, তাদের বিচার হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট থেকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন