এস. এ. নয়ন, রাঙ্গুনিয়া
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন পথসভায় বক্তৃতাকালে বলেছেন, তাঁর বাবা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যে, নির্দোষ সেটা আজকে সাধারণ জনগণের বাঁধভাঙ্গা উপস্থিতিই প্রমাণ করে দিয়েছে। আজ রাঙ্গুনিয়ার মানুষ সর্বত্র একই প্রশ্ন করছে ? সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে সাজানো মিথ্যা মামলায় হত্যার বিচার কবে হবে ? আজকে জনগণের সমর্থন দেখেই বুঝা যাচ্ছে বিচার হয়ে গেছে, এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নির্দোষ।
তিনি বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবেন শুধু নিজের দল বিএনপি’র নয়, রাঙ্গুনিয়ার সব মানুষের সেবা করবেন, এবং পাশে থাকবেন। সব ধর্মের মানুষ তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব তাঁর। ভোট চাইতে নয়, দোয়া চাইতে এসেছেন বলেও জানান তিনি। শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়ার জনগণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে বিভিন্ন পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগের আর কোনো অস্তিত্ব নেই, যারা ছিল তারা শেখ হাসিনার সাথে পালিয়ে গেছে, বাকিরা শুধু জিয়ার সৈনিক। তাই এখানে বিএনপিকে আর ভোট চাইতে হবে না, ভোট ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অত্যাচার সবার জানা, কিন্তু এখন ধৈর্য ধরতে হবে। বাকি যারা আওয়ামী লীগ আছে তারা রূপ পরিবর্তন করবে। তাদের চাঁদাবাজি, জমি দখল, হয়রানির দিন শেষ। তবে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাদের পুলিশে দিতে হবে। জিয়াউর রহমানের দলে চাঁদাবাজ, লুটেরা, জমি দখলকারীর কোনো স্থান নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দাদা ফজলুল কাদের চৌধুরীর সাথে রাঙ্গুনিয়ার রাজনীতি জড়িত উল্লেখ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, আমার বাবা আপনাদের কাছে বলে গিয়েছিল, তাঁর যদি কিছু হয়ে যায়, তাঁকে যেন রাঙ্গুনিয়ায় দাফন করা হয়। এই স্বৈরাচারি সরকার আমার বাবার এই ইচ্ছাকে পূরণ করতে দিল না। তবে আমার বাবাকে যেখানেই দাফন করি না কেন, তাঁর মন শরীর আত্মা সবকিছুই রাঙ্গুনিয়ায় মিশে আছে। তাই আজ আমার মা, বড়ভাইসহ পরিবারকে নিয়ে রাঙ্গুনিয়ায় এসে ঘোষণা করছি, যতদিন আমার পরিবার থাকবে, ততদিন রাঙ্গুনিয়ার মানুষের গোলামি করে যাব।
মরহুম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্মৃতিময় নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া। এই আসন থেকে তিনি বারবার সাংসদ নির্বাচিত হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। পিতার এই সংসদীয় আসন রাঙ্গুনিয়ায় দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ে এলে তাকে বরণ করতে মানুষের ঢল নামে রাঙ্গুনিয়াজুড়ে। উপজেলার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে দলীয় নেতা—কর্মী ও বহু নবীন—প্রবীণ মানুষও এসেছিলেন চৌধুরী পরিবারের এই উত্তরসুরিকে দেখতে।
এদিন সকালে রাউজান থেকে রাঙ্গুনিয়ার রাণীরহাট দিয়ে প্রবেশ করতেই তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের কয়েক সহস্রাধিক নেতাকর্মী। এরপর তিনি ইসলামপুরের গাবতল হয়ে ধামাইরহাট, শান্তিনিকেতন, মরিয়মনগর চৌমুহনী, লিচুবাগান, রোয়াজারহাট, ইছাখালী, গোচরা, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পদুয়াসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ কেও বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য দেন। পরে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রথম মাজার জেয়ারত করেন তিনি।
Leave a Reply