আজ ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

জালিয়াতি করে কারারক্ষী নিয়োগ, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চায় হাইকোর্ট


জালিয়াতির মাধ্যমে কারারক্ষী পদে অন্তত ৮৮ জনের নিয়োগে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে কারা মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৯ নভেম্বর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও মো. আবুল কালাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। এর আগে, চলতি বছরের ৩১ জুলাই ‘চাকরি ফিরে পেতে চান কুলাউড়ার জহিরুল জালিয়াতি করে কারারক্ষী পদে চাকরি ১৮ বছর পর তদন্তে প্রমাণিত!’ শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করেন ভুক্তভোগী জহিরুল ইসলাম এশু। প্রতিবেদনে বলা হয়, কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য ২০০৩ সালে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন কুলাউড়ার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এশু।নিয়োগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর যোগদানপত্র না পাওয়ায় চাকরির আশা ছেড়ে শহরে ব্যবসা শুরু করেন।

কিন্তু দীর্ঘ ১৮ বছর পর জানতে পারেন প্রতারণার মাধ্যমে তার নাম পরিচয় ব্যবহার করে ওই পদে চাকরি করছেন আরেকজন। আর ইতিমধ্যে জালিয়াতির বিষয়টি তদন্তেও সত্যতা পাওয়া গেছে। সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক কামাল হোসেনের নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের জেলার এজি মাহমুদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেল সুপার ইকবাল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে এশু চাকরি ফিরে পেতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক বরাবরে আবেদন করেন। কিন্তু সে আবেদনে সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।এ বিষয়ে মঙ্গলবার শুনানি শেষে বুধবার আদেশ দেন আদালত।

আদেশের বিষয়ে এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, আবেদনকারীর চাকরি ফেরত দিতে চার সপ্তাহের একটি রুল জারি করেছেন। আর তার চাকরি ফেরত পেতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে যে আবেদন আছে তা দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। পুরো ঘটনার যে তদন্ত হয়েছে তার প্রতিবেদন দাখিলে একমাস সময় দিয়েছেন এবং যে জালিয়াতি হয়েছে এতে কর্তৃপক্ষের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা থাকে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে এক মাসের প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

মঙ্গলবার শুনানির পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, দুইশ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের জাল-জালিয়াতি বা একজনের স্থলে আরেকজন শারীরিকভাবে কাজ করছেন বলে গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আসে। এ বিষয়টা যখন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে ওনারা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন এবং এ বিষয়গুলো তদন্ত করেছেন। সেই তদন্তে ২০০ জনের মধ্যে ৮৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ৩ জন পাওয়া গেছে, তারা প্রকৃত ব্যক্তির পরিবর্তে কর্মরত। আবার অনেকে রয়েছেন তারা ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন, যেটা ওনার প্রকৃত ঠিকানা নয়। আবার অনেকে বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রে জাল-জালিয়াতি করেছেন। এগুলো ধরা পড়ার পরে ইতিমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে যারা এ ধরনের জালিয়াতি করেছেন, এটা কিন্তু ফৌজদারী অপরাধ। আজকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর